যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত ভোটের জন্য কোনো আলাদা দিন ছিল না। একেক অঙ্গরাজ্যে একেক দিন ভোট হতো।
একই দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনটি পাস হয় ১৮৪৫ সালে। শুরুর দিকে ফেডারেল আইনের অধীনে ইলেকটোরাল কলেজের নির্বাচকদের ডিসেম্বরের প্রথম বুধবার পৃথক রাজ্যে মিলিত হওয়ার রীতি ছিল। ১৭৯২ সালের ফেডারেল আইন অনুসারে, রাজ্যগুলোর নির্বাচন সেই দিনের আগে ৩৪ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম চালু হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নির্ধারিত হয় ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ এর মাধ্যমে। এই ব্যবস্থায় ৫৩৮ জন ইলেক্টর নির্বাচিত হন। তারাই শেষে নির্ধারণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।
একই দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইন যখন পাস হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্রে ছিল কৃষিভিত্তিক সমাজ। যার কারণে কৃষকদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে। বছরের অন্য সময় ব্যস্ত থাকলেও নভেম্বরের শুরুতে কৃষকের ঘরে ফসল উঠে যায়। আর আবহাওয়াও বেশ অনুকূল থাকে। যার কারণে কৃষকের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নভেম্বরকে বেছে নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দিনে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো তখন যোগাযোগব্যবস্থা এত উন্নত ছিল। ১৮৪০ সালে রেলপথ নির্মাণের কারণে ডাক ও সংবাদপত্র পরিবহন অনেক দ্রুততর হয়ে ওঠে। দূর যোগাযোগের ক্ষেত্রে টেলিগ্রাফ প্রযুক্তি চলে আসার পর এক রাজ্যের নির্বাচনের ফল অন্য রাজ্যের ভোটকে প্রভাবিত করতে শুরু করে। তাই ১৮৪০ দশকের শুরুর দিকে কংগ্রেস সারা দেশে নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য একটি একক দিন নির্ধারণ করে।
১ নভেম্বর তারিখটি এড়ানোর জন্যই মূলত প্রথম সোমবারের পর প্রথম মঙ্গলবারকে বেছে নেওয়া। কারণ ১ নভেম্বর খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা ‘অল সেইন্টস ডে’ পালন করে। অপরদিকে অধিকাংশ আমেরিকানের জন্য রোববার হল উপাসনার দিন। আবার অনেক স্থানে বুধবার ছিল বাজারের দিন। এদিন কৃষকেরা তাদের ফসল নিয়ে শহরে বিক্রি করতে যেত। এছাড়া গ্রামীণ এলাকায় নিকটতম ভোটকেন্দ্র পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যেত। তাই যাতাযাত সুবিধার জন্য সোমবারকে হাতে রেখে মঙ্গলবারকে ভোট দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২৪
এমএম