অবশেষে তুরস্কের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ কুর্দি গোষ্ঠী কুর্দিস্থান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। তাদের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের আহ্বানের পর এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি তিনি অস্ত্র ছেড়ে দিয়ে এবং সংগঠনটিকে বিলুপ্ত করার কথা বলেছিলেন। শনিবার এক বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তারা আশা করছে তুরস্ক ওকালানকে মুক্তি দেবে, যিনি ১৯৯৯ সাল থেকে কারাবন্দি রয়েছেন। তারা মনে করে, ওকালান যদি মুক্তি পান, তবে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিতে পারবেন।
তুরস্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে পিকেকের চার দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাতে দেশতির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
ওকালানের এই আহ্বান আসে তুরস্কের উগ্র-জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি-এর নেতা এবং তুর্কি সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেভলেত বাহচেলির উদ্যোগের কয়েক মাস পর। বাহচেলি এই দীর্ঘ সংঘাতের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে আলোচনার একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
কুর্দি জনগোষ্ঠীর মধ্যে "আপো" নামে পরিচিত ওকালান এই সপ্তাহে ইস্তানবুলের দক্ষিণ-পশ্চিমে মারমারা সাগরের ইমরালি দ্বীপে তার কারাগারে কুর্দিপন্থী একটি দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। পিকেকের নির্বাহী কমিটি শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নেতা আপোর আহ্বান বাস্তবায়ন করতে আমরা আজ থেকে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করছি।
তারা আরও বলে, আমাদের কোনো বাহিনী অস্ত্র ধরবে না, যদি না আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
পিকেকে জানায়, ওকালানের কারাবাসের শর্ত শিথিল করতে হবে যাতে তিনি শারীরিক স্বাধীনতার মধ্যে বসবাস ও কাজ করতে পারেন এবং তার বন্ধুদেরসহ যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে অবাধে যোগাযোগ করতে পারেন।
১৯৮৪ সাল থেকে পিকেকে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে, যার লক্ষ্য ছিল কুর্দিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমানে তুরস্কের সাড়ে আট কোটি কুর্দি জনসাধারণ যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ। তবে তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র পিকেকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এই অস্ত্রবিরতির ঘোষণা শান্তির পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকের আশা, এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে এবং কুর্দি ও তুর্কি সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করবে।
সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৫
এমএম