লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট ছিলেন পেদ্রো কাস্তিলো। তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন ‘দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে।
এএফপি বলছে, ২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রথম দরিদ্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন বামপন্থী স্কুল শিক্ষক পেদ্রো কাস্তিলো। প্রেসিডেন্টের আসনে বসার পর অসখ্য দুর্নীতিতে নাম আসে তার। ক্ষমতার ১৭ মাস পর দুর্নীতির অভিযোগ এড়াতে পেরুর পার্লামেন্ট (কংগ্রেস) ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তার এই তৎপরতাকে ‘বিদ্রোহের’ চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করে তাকে অভিশংসন ও গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে তাকে প্রতিরোধমূলক হেফাজতে রাখা হয়। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দেশটির আদালতে তার বিচার শুরু হয়, যা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। কাস্তিলো আদালতে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগকে ‘প্রহসন’ বলে খারিজ করে দিয়েছেন। আদালতে বিচারকদের সামনে তিনি বলেন, আমি এমন একটি মৌখিক বিচারের মুখোমুখি হতে পারি না, যেখানে সবকিছু পূর্ব নির্ধারিত হতে পারে। এই বিচার একটি প্রহসন।
বিদ্রোহ ও কর্তৃত্বের অপব্যবহারের অভিযোগে ৫৫ বছর বয়সী কাস্তিলোর ৩৪ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেছেন প্রসিকিউটররা। তিনি ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষকের সন্তান। পেরুর গ্রামীণ দরিদ্র ভোটারদের সমর্থনে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ২৪ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ২০১৭ সালে শিক্ষকদের ধর্মঘটের সময় তিনি ইউনিয়ন নেতা হিসেবে জাতীয় খ্যাতি অর্জন করেন।
২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি তীব্র রাজনৈতিক বিরোধিতার মুখোমুখি হন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগেরও তদন্ত শুরু হয়। কাস্তিলো তখন অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এগুলো তাকে সরিয়ে দেওয়ার রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।
এক পর্যায়ে কংগ্রেসে জরুরি অধিবেশন ডেকে ভোটের মাধ্যমে কাস্তিলোকে অভিশংসন করা হয়। পরে কাস্তিলো তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে লিমায় মেক্সিকান দূতাবাসে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হন। তার পরিবার আশ্রয় প্রার্থনা করে এখনও দূতাবাসে রয়েছে।
আদালতে কাস্তিলোর সঙ্গে সাবেক তিনজন মন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির একজন উপদেষ্টা ও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাও বিচারাধীন রয়েছেন।
কাস্তিলোর অভিশংসনের পর তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। দেশটিতে আগাম নির্বাচনের দাবিতে অসংখ্য বিক্ষোভ সত্ত্বেও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন তিনি।
৬২ বছর বয়সী বলুয়ার্তের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে, যদিও তিনি ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিচার থেকে অব্যাহতি ভোগ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৫
এমজে