বেঙ্গালুরুতে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে বাসা ভাড়া নিতে পারছেন না ভারতের স্বনামখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি মাদ্রাজ-এর এক প্রাক্তন ছাত্র। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সঞ্জীদ নামের ওই ব্যক্তি গত ২৪ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স -এ একটি পোস্টে লেখেন, বিয়ে হতে চলেছে। ইন্দিরানগর/কোরামঙ্গলার আশেপাশে দুই বেডের বাসা খুঁজছি। কারও কাছে কোনও তথ্য/ব্রোকার থাকলে প্লিজ সরাসরি যোগাযোগ করুন।
কিন্তু মাত্র দুই দিন পর, তার সেই আশাবাদে ছেদ পড়ে। আগের টুইটটি কোট করে তিনি লেখেন: ৪টা জায়গা দেখলাম ব্রোকারের সঙ্গে। দিনের শেষে ব্রোকার বলে, স্যার, পাকিস্তান-সম্পর্কিত সমস্যার জন্য মালিকরা মুসলিমদের নিতে চান না। এটা কেমন কথা! বেঙ্গালুরুর কোন কোন এলাকা ইসলামোফোবিক নয়? এখন সেটা মাথায় রেখেই বাসা খুঁজব।
সঞ্জীদের এই পোস্ট প্রায় ৫০ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং বহু ব্যবহারকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে সহানুভূতি জানিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
একজন লিখেছেন, দুঃখিত সঞ্জীদ, আপনাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি কুইন্স রোড, শিবাজি নগর, কোরামঙ্গলার সেকেন্ড ব্লক ও কক্স টাউনের মতো কিছু এলাকাকে তুলনামূলকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মুসলিম মালিকদের উপস্থিতির জন্য অনুকূল বলে পরামর্শ দেন।
আরেকজন লিখেছেন, ভাই, আমি সদ্য বিয়ে করেছি, তাই জানি কী রকম টেনশন থাকে বাসা খোঁজার। এর সঙ্গে যদি এমন ধর্মীয় বৈষম্যও সহ্য করতে হয়, তাহলে সেটা আরও কষ্টকর। প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে থাকতে পারেন যতদিন না পর্যন্ত ঠিকমতো জায়গা মিলে।
কেউ কেউ সঞ্জীদকে বেঙ্গালুরু ছেড়ে অন্য শহরে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। একজন বলেন, গুরগাঁও চলে আসুন, এখানে আমার জানা মতে এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না।
অনেকে আবার শুধু বিস্ময় আর দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, এটা সত্যিই দুঃখজনক। ভাবিনি বেঙ্গালুরুতেও এমন হতে পারে। অন্য একজন বলেন, আরও একটু ধৈর্য ধরে খুঁজুন, ভালো জায়গা নিশ্চয়ই পাবেন।
সঞ্জীদের অভিজ্ঞতা আবারও মনে করিয়ে দিল, শহর যতই আধুনিক হোক না কেন, ধর্মীয় পরিচয় এখনো কারও জীবনযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে অন্তর্ভুক্তিমূলক মনোভাবের প্রয়োজনীয়তাই এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে এসেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমএম