ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মোগাদিসুতে ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ২৭৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
মোগাদিসুতে ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ২৭৬ পেছনে ধ্বংসস্তূপ, মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছেন এক সোমালি নাগরিক

সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। দুই ঘণ্টার ব্যবধানে চালানো দু’টি বোমা হামলায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩০০ মানুষ। হামলাস্থল ও আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে প্রলয়-পরবর্তী ধ্বংসস্তূপে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে দেশটির তথ্যমন্ত্রী আবদিরহমান ওসমান এক টুইটার বার্তায় হতাহতের এ সংখ্যা জানান। শনিবারের (১৪ অক্টোবর) ওই হামলায় রোববার (১৫ অক্টোবর) তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবদুল্লাহি মোহাম্মদ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, শনিবার প্রথমে মোগাদিসুর অভিজাত সাফারি হোটেলের প্রবেশপথে একটি এবং মেদিনা এলাকায় অপর বোমা হামলাটি চালানো হয়। সরকারি বিভিন্ন ভবন সংলগ্ন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হোটেলটির প্রবেশপথে প্রথমে লরিতে ভরে আনা বোমার বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। এতে হোটেলটির একাংশ ধসে পড়ে। ধসে যায় পাশের কয়েকটি ভবনও। আগুন ধরে যায় আশপাশের গাড়িগুলোতে। পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে বিধ্বস্ত ভবন ও গাড়ির খণ্ডাংশ। বোমা হামলার পর ধসে পড়ে একাধিক ভবনএরপর চার বন্দুকধারীর প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবিনিময় শুরু হয়। বেশ কিছু সময় ধরে চলে মুহুর্মূহু গুলিবিনিময়। এসময় ঘটনাস্থলেই বেশ কিছু লোক নিহত হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় আরও অনেকে।

হামলার পর পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে বিধ্বস্ত ভবন ও গাড়ির খণ্ডাংশ। এখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় মরদেহ। আহতদের রোনাজারিতে পুরো মোগাদিসুর আকাশ ভারী হয়ে ওঠে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বোমা-গুলিতে যেমন মানুষ মরেছে, তেমনি ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়েও মৃত্যু হয়েছে অনেকের। রোববার শেষবেলায় ধসে পড়া ওসব ভবনের নিচে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অনেকের মরদেহ।

সাফারি হোটেলে হামলার দু’ঘণ্টা পর রাজধানীর উপকণ্ঠের মেদিনা এলাকায় আরেকটি গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে মারা যায় আরও বেশ কিছু লোক।  বোমা হামলার পর মোগাদিসু পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপেদু’টো ঘটনা মিলিয়ে রোববার (১৫ অক্টোবর) মধ্যরাত পর্যন্ত ২৭৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী ওসমান। তিনি আরও জানান, হামলায় আহত হয়ে মোগাদিসুর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ৩ শতাধিক মানুষ।

সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহি মোহাম্মদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ডের প্রধান সাক্ষাৎ করে যাওয়ার দু’দিন পর এই দু’টি হামলা হলো।

কারা এই হামলা চালিয়েছে তা তাৎক্ষণিক জানা না গেলেও প্রায়ই মোগাদিসুতে হামলা চালিয়ে থাকে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট আল-শাবাব গোষ্ঠীটি। তারা দীর্ঘদিন ধরে সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে আসছে।

এই বর্বরোচিত হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক, ইথিওপিয়া, কেনিয়াসহ অনেক দেশ। তুরস্ক গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোরও প্রস্তাব দিয়েছে সোমালিয়াকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
এইচএ/

** সোমালিয়ায় ধ্বংসলীলা, নিহত বেড়ে ১৮৯
** সোমালিয়ায় বোমা হামলায় নিহত ৫৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।