রাশিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশরা পুতিনকেই বেছে নেবেন। তার ধারেকাছে আসার মতো নেতা গোটা রাশিয়ায় একজনও নেই।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সামনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমপক্ষে ৭৪ শতাংশ ভোটার পুতিনকেই বেছে নেবেন –এমন অভিমত উঠে এসেছে রাশিয়ায় পরিচালিত সর্বশেষ এক জরিপে।
সারাদেশের ১০০০ জন অংশগ্রহণকারীর টেলিফোনে দেওয়া অভিমতকেই ভিত্তি করেই এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে ভুলের হার ১ দশমিক ৮ ভাগেরও কম।
জরিপে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি হবে শতকরা ৬৭ শতাংশ। এই হার পশ্চিমা গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী দেশগুলোর ভোটার উপস্থিতির চেয়ে ঢের ঢের বেশি।
অল রাশিয়া পাবলিক ওপিনিয়ন রিসার্চ সেন্টার গত ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি --এই তিনদিনে এই জনমত জরিপটি চালায়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, সামনের রোববার যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় তাহলে তারা কাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন।
বেশিরভাগই পুতিনের পক্ষে। এর বড় কারণ নেতা হিসেবে পুতিনের বিশ্বাসযোগ্যতা। তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বমঞ্চে রাশিয়ার ভাবমূর্তি। পাশাপাশি রাশিয়াকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা এবং এর প্রভাবকে তুলে ধরবার যে নেতৃত্ব-কুশলতা ভ্লাদিমির পুতিনের রয়েছে, তাকে রুশ জনগণ শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় সবাই একথা বলেছেন। শতকরা ৭৪ শতাংশই এসব কারণে পুতিনকেই ভোট দেবেন বলেছেন।
অন্যদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সেটা এরকম:
৭.২ শতাশ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পদে তারা ভোট দেবেন রুশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা পাভেল গ্রুদিনিনকে।
৪.৭ শতাংশ ভোট দেবেন বেফাঁস ও বিপজ্জনক উক্তি করার জন্য কুখ্যাত উগ্র মেজাজের লিবারেল ডেমোক্রেটিক নেতা ভ্লাদিমির ঝিরিনোভস্কিকে।
১ শতাংশ ভোটার বেছে নেবেন রুশ সমাজবাদী, টিভি ব্যক্তিত্ব সিভিল ইনিশিয়েটিভ দলের নেতা কাসেনিয়া সোবচাককে (৩৬)।
আর ইয়াবলোকো দলের প্রতিষ্ঠাতা গ্রিগরি ইয়াভলিনস্কি এবং গ্রোথ পার্টির প্রার্থী ব্যবসা-ন্যায়পাল বরিস তিতভ—এই দুজন পাবেন যথাক্রমে ০.৬ এবং ০.৩ শতাংশ ভোট।
এই হচ্ছে অবস্থা। রাশিয়ার রাজনীতি এভাবেই হয়ে আছে এক ‘পুতিন-স্বর্গ’। আর অন্যদের কাছে তা এক নরক। এর কারণও নেতা হিসেবে পুতিনের আকাশচুম্বি অর্জন ----ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ করার সাহস ও ক্ষমতার পাশাপাশি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের হটিয়ে আইএস-কে কচুকাটা করার সাফল্য। তাছাড়া পুতিনের কারণে রাশিয়া ফিরে পেয়েছে তার সুপার পাওয়ার স্ট্যাটাস। বিশ্ব রাজনীতিতে কোনো বিষয়েই রাশিয়াকে এড়িয়ে একক সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের নেই।
তার ব্যক্তিত্বের বিশালতার কাছে দেশে ও বিদেশে আর সব নেতাই নিতান্ত বামুন। পুতিন আরো কতোকাল যে ‘জায়ান্ট অ্যামাং দ্য ডোয়ার্ভস’ থাকবেন তা কেউ বলতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
জেএম