কোরবানিদাতা কোরবানির পশু থেকে যে গোশত পান, সাধারণত তা থেকে কিছু অংশ গরিব-মিসকিনদের দিয়ে দেন, কিছু অংশ নিজেরা খান আর কিছু অংশ সংরক্ষণ করে রাখেন।
কেউ কেউ আবার কোরবানির কোনো গোশত সংরক্ষণ করে রাখেন না; সবটুকু দান করে দেন বা খেয়ে ফেলেন।
কোরবানির গোশত যত দিন ইচ্ছা সংরক্ষণ করা যায় এবং খাওয়া যায়। এতে শরিয়তে কোনো বাধা নেই।
ইসলামের প্রথম যুগে কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করার অনুমতি ছিল না। কারণ রাসুল (সা.) বলেছিলেন, তোমরা তিন দিন পর্যন্ত কোরবানির গোশত রাখতে পারো। এরপর অবশিষ্ট যা থাকে, সদকা করে দাও।
তবে পরে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, দরিদ্র আগন্তুকদের কথা বিবেচনা করে আমি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও; সংরক্ষণও করতে পারো। ’ (মুসলিম: ১৯৭১)
বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনু আবদিল বার (রহ.) বলেন, আলিমগণ এ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে, তিন দিনের পরেও কোরবানির গোশত সংরক্ষণের অবকাশ রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাটি রহিত হয়ে গেছে। (আত-তামহিদ: ৩ / ২১৬)
কেউ যদি কোরবানির গোশত কাউকে না দিয়ে পুরোটা সংরক্ষণ করে রাখে, তাও জায়েজ হবে। ফিকহের কিতাবে বলা হয়েছে, পুরো গোশত জমিয়ে রাখলেও অসুবিধা নেই। ’ (বাদায়েউস সানায়ে: ৪ / ২২৪, আলমগিরি: ৫ / ৩০০)
গরিব-মিসকিনদের দেওয়ার পর বাকি গোশত সংরক্ষণ করে রাখলেও কোনো অসুবিধা নেই। তাও নিশ্চিন্তে রাখা যাবে। (মুয়াত্তা মালেক: ১ / ৩১৮) এবং যতদিন ইচ্ছা কোরবানির গোশত খাওয়া যাবে।
তবে ১০ মহররম বা আশুরার দিন খাওয়ার উদ্দেশে জমিয়ে রাখার ব্যাপারে আলেমগণের আপত্তি রয়েছে। সওয়াবের উদ্দেশে এটি করা জায়েজ নয় বলে মনে করেন তারা।
সূত্র: ফাতহুল বারি: ১০ / ৩০-৩১; আল-বাহরুর রায়িক: ৮ / ২০৩; আল মাজমু: ৮ / ৪১৯; নাইলুল আওতার: ৬ / ২৬৭)
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৪
জেএইচ