২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ‘ইসরাইল ন্যাশনাল নিউজে ‘Catholic France, Adieu; Welcome, Islam’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ ছাপা হয়। যার সরল অনুবাদ, ‘ক্যাথলিক ফ্রান্স বিদায়, স্বাগতম ইসলাম।
লেখক নিবন্ধটি শুরু করেন এভাবে এভাবে—
ফ্রান্সে গির্জার ঘণ্টাধ্বনির দিন কি শেষ?
‘প্যারিসের সিনজেলা শহরে বাস করে ৫০০ লোক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর এখানকার বয়েসেটস গির্জার ঘণ্টা বাজত। এরপর প্রশাসনিক আদালত সেই ঘণ্টাধ্বনি বন্ধ করে দিয়েছে।
মূলত পৃথিবীর স্পটলাইট থেকে বহু বছর আগেই হারিয়ে গেছে ফ্রান্স। এক সময়ে গির্জা কন্যা নামে দেশটির যে পরিচিতি ছিল তাও এখন আর অবশিষ্ট নেই। একদিকে রাষ্ট্রীয় সেক্যুলারিজম, অপরদিকে ইসলামের প্রাধান্যের কারণে ক্যাথলিক ফ্রান্স নৈতিকভাবে এখন মৃতপ্রায়।
গত ২৫ বছরে ফ্রান্সে ইসলাম গ্রহণের হার দ্বিগুণ বেড়েছে। গত ১০০ বছরে ফ্রান্সে যতগুলো ক্যাথলিক গির্জা নির্মিত হয়েছে, গত ৩০ বছরেই তার চেয়ে বেশি মসজিদ ও নামাজকেন্দ্র তৈরি হয়েছে।
অতিসম্প্রতি ফ্রান্সের সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম নেতা দালিল বুবাকিউর ফ্রান্সে আগামী দু’বছরে মসজিদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার আহবান জানিয়েছেন। প্যারিস মসজিদের প্রধান ইমাম দালিল বুবাকিউর বলেছেন, বর্তমানে দেশটিতে যে পরিমাণ মসজিদ আছে সেগুলো মুসলিমদের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। তাই তিনি এ আহবান জানিয়েছেন। বর্তমানে ফ্রান্সে মসজিদের সংখ্যা প্রায় ২, ২০০টি।
দলিল বুবাকিউর ফ্রেঞ্চ মুসলিম কাউন্সিলেরও প্রেসিডেন্ট। ফরাসী ইউনিয়ন অফ ইসলামিক অর্গানাইজেশনের বার্ষিক এক সম্মেলনে তিনি এই আহবান জানান।
ফরাসী সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ লাখের মতো। পশ্চিম ইউরোপের যেকোনো দেশের চাইতে ফ্রান্সে মুসলমানের সংখ্যা সবচে’ বেশি।
বস্তুত ফ্রান্সে জনসংখ্যার তাত্ত্বিক হিসেবে ইসলামই বিজয়ী। ফ্রান্সে অমুসলিম পরিবার প্রতি শিশুর সংখ্যা ১.২। কিন্তু মুসলিম পরিবারে শিশুর সংখ্যা এর ৫গুণ বেশি। আগে ফ্রান্সের মানুষ প্রতি রবিবার গির্জায় যেতো, এখন যায় প্রতি দুই মাসে একবার। তাই গির্জাগুলোর তিন চতুর্থাংশই খালি পড়ে থাকে।
এ ছাড়াও রয়েছে যাজক সঙ্কট। ফরাসী যাজক না পাওয়ায় এখন তাদের স্থান দখল করছে আফ্রিকার যাজকরা। ইতোমধ্যেই অন্তত ৬০টি ক্যাথলিক গির্জা বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো মুসলমানরা কিনে মসজিদ রূপান্তরের কাজ করছে।
গ্রেট মস্ক অব প্যারিস বা প্যারিসের বড় মসজিদে প্রতিনিয়ত ধর্মান্তরিতদের জন্য অনুষ্ঠান করতে হয়। ৮১ মিটার উঁচু মিনারের এই মসজিদে ধর্মান্তরিতদের অনুষ্ঠানের বিষয় প্রমাণ করে, ফ্রান্সে মুসলমানদের শক্তিশালী অবস্থানের কথা।
ফ্রান্সে ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। অষ্টম শতকে স্পেন বিজয়ের পর থেকে ফ্রান্সে মুসলমানদের বসবাস শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘন্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৫
এমএ