ওমান এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি দেশ। পুরো নাম ওমান সালতানাত।
ওমানের মধ্যভাগের বেশি অংশ জুড়েই মরুভূমি। সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি পাহাড়ি এলাকায় রাজধানী মাসকাট এবং আরো কয়েকটি শহর গড়ে উঠেছে।
পর্যটকদের কাছে ওমান খুব প্রিয়। মরুভূমি, সমুদ্র উপকূল আর পাহাড় দেখার জন্য প্রচুর পর্যটক এখানে আসে। তাদের জন্য অন্য একটি আকর্ষণ ওয়াদি। পাহাড়ের মাঝখানের শুকনো উপত্যকাগুলোর নাম ওয়াদি। এগুলো বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরে উঠে নদীর রূপ নেয়।
ওমানের আকর্ষণীয় পর্যটন স্থলসমূহের মধ্যে রয়েছে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি, সৈকত, প্রাচীন বাজার, দুর্গ, প্রাচীন বসতি, স্তম্ভ এবং জাতিসংঘের ইউনেস্কো স্বীকৃত ঐতিহ্য এলাকাসমূহ। দর্শনার্থীরা ভ্রমণ, পাহাড়ে আরোহন, কচ্ছপ, ডলফিন ও পাখি দর্শন এবং মরুভূমিতে সাফারিসহ বিভিন্ন আনন্দদায়ক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারেন।
ইউনেস্কো ওমানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সালাহ নগরী এবং বহু প্রাচীন নিদর্শন স্থল বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
মাসকাট ওমানের রাজধানী এবং বৃহত্তম নগর। রাজধানীর অদূরে আল খুয়েইর মিনিস্ট্রিজ ডিস্ট্রিক্ট এলাকায় অবস্থিত আল জাওয়াবি মসজিদ (Al Zawawi Mosque)। এর অদূরে ওমানের বৃহত্তম মসজিদ সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মস্ক। মসজিদ সুলতান কাবুসে রয়েছে, ইসলামি স্থাপত্যকলার অপরূপ নিদর্শন। এ মসজিদে আছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝাড়বাতি আর হাতে বানানো কার্পেট। দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যে এবং আভিজাত্যে এটি অতুলনীয় হলেও জাওয়াবি মসজিদও বিশেষ কারণে ইসলামি উম্মাহ ও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
এই জাওয়াবি মসজিদের অভ্যন্তর ভাগের দেয়ালে তাম্রপাত্রে খোদিত আছে পুরো ত্রিশ পারা কোরআনে কারিমে। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা মুগ্ধ নয়নে দেখেন এ নিদর্শন।
১৯৮৫ সালে আল খুয়েইর- এর জাওয়াবি পরিবার এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। আবদুল মুনেইম আল জাওয়াবি এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। মসজিদের প্রবেশমুখে মর্মর প্রস্তরে সুলতান কাবুসের মহিমা কীর্তন করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ওমানের মুসলমানদের জন্য এটি জাওয়াবি পরিবারের পক্ষ থেকে উপহার বিশেষ।
ভূমি থেকে ২৫-৩০ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে মসজিদটিতে উঠতে হয়। মসজিদের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে তিনটি সুউচ্চ প্রবেশদ্বার রয়েছে। এর ভেতরের গম্বুজটি দেখতে একটি উল্টানো পদ্ম ফুলের মতো। গম্বুজের ভেতরের অংশ প্রাচ্যের নক্সাদার স্টোনওয়ার্ক আর ২২ ক্যারেট স্বর্ণখচিত আরবি ক্যালিওগ্রাফির আকর্ষণীয় কাজ রয়েছে। গোলাপি রঙের মার্বেল পাথরে মসজিদের বহির্ভাগ নির্মিত। এর প্রবেশ তোরণগুলোতেও দেওয়া হয়েছে কোরআনিক বিভিন্ন নক্সা।
মসজিদের মিনারটি অনেক উঁচু এবং বহু দূর থেকে তা দৃশ্যমান। আল জাওয়াবি মসজিদের লাগোয়া স্থাপনাটি একটি লঙ্গরখানা। নিয়মিত এখানে সন্ধ্যার পরে দরিদ্র ও মুসাফিরদের জন্য তাবারুকের ব্যবস্থা করা হয়, যদিও এতে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন।
কথিত আছে যে, এখানকার তাবারুক বহু অসুখ-বিসুখ হতে শাফা দেয়। এই বিশ্বাসের ফলে প্রচুর মানুষ এ তাবারুক নিতে এখানে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
এমএ/