ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আরও ৭০ হাজার আলেমের ফতোয়া

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৫
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আরও ৭০ হাজার আলেমের ফতোয়া

শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম ভাঙিয়ে বিপথগামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ফতোয়া (ধর্মীয় সিদ্ধান্ত) দিয়েছেন ভারতের আরও ৭০ হাজার আলেম ও মুফতি। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ভারতের উত্তরপ্রদেশে একটি ওরস অনুষ্ঠানে তারা এ ফতোয়া প্রদান করেন।



টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, উত্তরপ্রদেশের বেরেলির আহমেদ রেজা খানের মাজারের (দরগাহ-ই-আলা হজরত) পাশে গত রোববার (৬ ডিসেম্বর) থেকে ৯৭তম ওরস শুরু হয়। সেই ওরসে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখ লাখ মুসলমান। সেখান থেকেই ওই ফতোয়া জারি করা হয়েছে।

জারিকৃত ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল-কায়েদা ও তালেবানের মতো সংগঠন ‘ইসলামপন্থী সংগঠন নয়। ’ এ সংগঠনগুলোর সদস্যরা ‘মুসলমান নয়’ বলেও ফতোয়ায় বলা হয়।

ফতোয়া প্রদানকারীদের অন্যতম মুফতি মোহাম্মদ সালিম নূরী। মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, গত রোববার ওরস শুরু হওয়ার পর থেকেই দরগাহে আসা মুসলমানদের মধ্যে ফতোয়ার পক্ষে সমর্থনের ফরম বিলি করা হয়। তিন দিনে তাদের এ ফতোয়াকে সমর্থন করেছেন ১৫ লাখ মুসলমান।

মুফতি সালিম ইসলাম ধর্মের নাম ভাঙিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জনপদে সন্ত্রাসে লিপ্তদের সন্ত্রাস বন্ধেরও আহবান জানান।

দরগাহ-ই-আলা হজরতের প্রধান নির্বাহী হজরত সুবহান রাজা খান বলেন, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলার পর এ বছরের ওরসে ফতোয়া জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাতে করে এটা স্পষ্ট হয়, মুসলমানরা সব ধরনের সন্ত্রাসকে নিন্দা জানায়।

দরগাহর অন্যতম দায়িত্বশীল মুফতি মোহাম্মদ এহসান রাজা খান বলেন, ‘পবিত্র কোরআনে কারিমে মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, একজন নিরীহ লোককে হত্যা গোটা মানবজাতিকে হত্যার সমতুল্য। ’

ওরসে উপস্থিত ও ফতোয়াকে সমর্থনকারী বিশ্ব ইসলামিক মিশন বৃটেনের প্রধান মুহাম্মদ ফারুক আল কাদেরি বলেন, কোনো ধর্মই সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেয় না। ইসলাম ধর্ম সর্বদা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। তিনি ইসলাম ধর্ম বাদেও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মের নামে সন্ত্রাস ও হিংসা বন্ধের আহবান জানান।

এই ফতোয়ার আগেও ভারতের বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন আইএসের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়ে তাদের কার্যক্রমকে অনৈসলামিক বলে ঘোষণা করেছেন। তারা হলেন- দিল্লির জামে মসজিদের শাহী ইমাম, আজমির দরগাহর প্রতিনিধি, নিজামউদ্দিন আউলিয়া দরগাহ কর্তৃপক্ষ, রেজা একাডেমি, ভারতের উলামা কাউন্সিল, অল ইন্ডিয়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জমিয়তে আহলে হাদিস মুম্বাই, অল ইন্ডিয়া তানজিমই মসজিদ ও দারুল উলুম দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ।

ওই সব ফতোয়ায় তারা বলেন, বিতর্কিত এই সংগঠনটি নিরপরাধ মানুষদের জঘন্যভাবে হত্যা করছে। তারা তাদের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ডের ছবি প্রকাশ করছে। সরাসরি ভিডিওচিত্রে বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদের উপস্থাপন করছে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিচ্ছে এবং তারা তাদের এসব কর্মকাণ্ডকে শরিয়া (ইসলামি আইন) অনুযায়ী বৈধ বলে দাবি করছে। অথচ এর কোনো শরয়ি ভিত্তি নেই। এমন কাজ ইসলাম অনুমোদন করে না।

ফতোয়ায় তাদের এমন ন্যাক্কারজনক কাজকে একেবারে অমানবিক উল্লেখ করে ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেছেন, ইসলামে কখনোই যেকোনো পরিস্থিতিতে এই ধরনের বেআইনি কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাদের কর্মকাণ্ড ইসলাম অথবা এর শিক্ষার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তারা মূলত সন্ত্রাসের রাজত্ব করছে। ইসলামের বদনাম করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।