শীত উপেক্ষা করে সিলেট বিভাগীয় ইজতেমার ময়দান লাখো মুসল্লির পদভারে মুখরিত। চলছে বয়ান, তালিম, তাশকিল ও অন্যান্য আমল।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের সিলেট-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন লতিপুর, খিদিরপুর এলাকার হাওর মাঠে ইজতেমাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইজতেমার মাঠে আগামীকাল শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সিলেট অঞ্চলের সর্ববৃহৎ জুমার জামাত।
প্রায় ২শ’ একর জমিজুড়ে ইজতেমার জন্য মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। সিলেটের ইজতেমায় বিভিন্ন দেশের জামাত অংশ নেবেন।
৩১ ডিসেম্বর শনিবার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে এই ইজতেমা শেষ হবে। ইজতেমায় পাকিস্তানের রায়বেন্ড মারকাজ, দিল্লির মারকাজ ও কাকরাইলের শীর্ষ মুরুব্বিরা বয়ান করবেন।
ইজতেমায় অংশ নেওয়া মাওলানা সালিম সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে জানান, ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ধর্মপ্রাণ তাবলিগ জামাতের সাথীরা জামাতবদ্ধ হয়ে ইজতেমার মাঠে অবস্থান নিয়েছেন।
দীর্ঘ ৩২ বছর পর তৃতীয়বারের মতো সিলেটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাবলিগ জামাতের সিলেট বিভাগীয় ইজতেমা। এর আগে ১৯৬৫ ও ১৯৮৪ সালে সিলেট জেলার সুরমা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন টেকনিক্যাল মাঠে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সিলেট বিভাগের ৪ জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের মুসল্লিরা এই ইজতেমায় অংশ নেবেন। আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে পুরো ইজতেমার মাঠকে ১১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
ইজতেমায় মহিলাদের জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তবে আখেরি মোনাজাতের সময় মাঠ সংলগ্ন বাসাবাড়িতে বসে নারীরা যেন মোনাজাতে শরিক হতে পারে এ জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অতিরিক্ত কিছু মাইক লাগানোর পরিকল্পনা করেছেন।
ইজতেমায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জন্য একটি ক্যাম্প, কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাবলিগের নিজস্ব নিরাপত্তা দল মাঠের প্রবেশ পথে নিয়োজিত আছে।
সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার তাবলিগ জামাতের সাথীরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ইজতেমা মাঠে সাড়ে নয় লাখ বর্গফিট প্যান্ডেল নির্মাণসহ মাঠ প্রস্তুত করেছেন। মাঠে প্রয়োজনীয় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সার্বিক বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেটের ইজতেমায় আগত বিদেশি অতিথিদের থাকার জন্য ৩টি পৃথক শেড নির্মাণ ১০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ওজু ও গোসলের জন্য ১২টি নির্মাণ করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবরাহের জন্য ২টি অস্থায়ী ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ১৮শ’ অস্থায়ী টয়লেট।
ইজতেমার ময়দানে আগত মুসল্লিদের জন্য সিলেট নিউজ ওয়ার্ল্ড ডটকমের উদ্যোগে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের আর্থিক সহযোগীতায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। অসুস্থদের জরুরীভাবে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য দাতব্য সংস্থা আল মারকাজুল খায়েরি আল ইসলামির অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক ইজতেমা মাঠে থাকবে। সেবা সংস্থা রেডক্রিসেন্টও একটি হেলথ ক্যাম্প চালু করেছে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
এমএইউ/