মালাউই’র প্রধান ধর্ম খ্রিস্টান এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইসলাম। মুসলমানদের প্রায় সবাই সুন্নি মতালম্বী।
তবে হাল সময়ের দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যার হার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯৮ সালের জরিপে মুসলিম সংখ্যা ছিল মাত্র ১২.৮%। ২০১০ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২৫%। বর্তমানে ১ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগই মুসলমান।
মালাউই’তে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো, সেখানকার মুসলমানরা সমাজসেবামূলক প্রচুর কাজ করেন। সেই সঙ্গে দাওয়াতে তাবলিগের প্রভাবে মানুষ ইসলামের দিকে ঝুঁকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছে।
এ ছাড়া মুসলিমদের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ব্যক্তি উদ্যেগে প্রতিষ্ঠিত কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
আফ্রিকার ছোট এই দেশে মুসলমানদের রয়েছে আলাদা প্রচারমাধ্যম। দেশটির জনপ্রিয় অনলাইন malawimuslims.com ও রেডিও ইসলাম মালাভি এর অন্যতম।
ইংরেজি মালাউই’র সরকারি ভাষা। তবে আরও বেশ কয়েকটি ভাষার প্রচলন রয়েছে। তন্মধ্যে নিয়াঞ্জা (চেওয়া নামে বেশি পরিচিত) ভাষা বেশি প্রচলিত। এর পর মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলে ইয়াও ভাষায়। মোজাম্বিক, তানজানিয়া এমনকি চীনেও ভাষাটির প্রচলন রয়েছে।
মালাউই’র মুসলিম নেতারা দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন, ইয়াও ভাষায় পবিত্র কোরআনের অনুবাদ করতে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পরিসমাপ্তি ঘটেছে এ অপেক্ষার। শেষ হয়েছে ইয়াও ভাষায় কোরআন অনুবাদের কাজ।
রোববার (০১ জানুয়ারি) মুসলিম এসোসিয়েশন অব মালাউই ও মালাউই উলামা পরিষদের উদ্যোগে মাঙ্গুচি শহরে ইয়াও ভাষায় অনূদিত কোরআনের কপির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
মালাউই উলামা পরিষদের প্রধান ও গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হামিদ সিলিকা ১০ বছর সময় নিয়ে ইয়াও ভাষায় কোরআন অনুবাদের কাজটি করেছেন।
পরে অনুবাদকৃত কোরআন মালয়েশিয়ার আলেমদের ১৪ জনের একটি দল প্রয়োজনীয় সম্পাদনা শেষে ছাপানোর সম্মতি দেন। দুবাই চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রথম সংস্করণে ২০ হাজার কপি কোরআন ছাপানো হয়েছে।
মালাউই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট বাকিলি মুলুজি ছিলেন অনূদিত এ কোরআনের কপির প্রথম ক্রেতা। তিনি ২০০ কপি কোরআনের ক্রয় করে তা মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারীদের উপহারস্বরূপ প্রদান করেন।
মালাউই’র পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান আওলাদি মুসা মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেন, মালাউই’র মুসলমানদের শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ইয়াও গোত্রের। অতএব, পবিত্র কোরআনকে সঠিক ও সহজভাবে অনুধাবনের জন্য এ ভাষায় কোরআন অনুবাদের বিষয়টি ছিলো অপরিহায্য।
তিনি বলেন, আমরা গর্বিত যে, কয়েক বছর আগে ‘চিচওয়াই’ ভাষায়ও পবিত্র কোরআন অনুবাদ হয়েছে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
এমএইউ/