ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জুন ২০২৪, ১৯ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

‘তদন্তে দেশপ্রেমিক’ অফিসারের কথা বলেলেন হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৭
‘তদন্তে দেশপ্রেমিক’ অফিসারের কথা বলেলেন হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: ‘শুধু নিজের জন্য নয়, যারা দেশের জন্য কাজ করেন’,  সব ধরনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তাদের নিয়োজিত করার বিষয়টি দেখতে পুলিশ প্রধানকে বলেছেন হাইকোর্ট।

গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে রোববার (০২ এপ্রিল) এমন কথা বলেছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির বলেন, ‘এ মামলার যে তদন্ত হয়েছে, তা আরও সুষ্ঠু, সুনির্দিষ্টভাবে হওয়া উচিৎ ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তার তদন্তের ওপরই নির্ভর করে একটি ফৌজদারি মামলার প্রমাণের বিষয়টি। সেজন্য দেশপ্রেমিক, দায়িত্বশীল, দায়বদ্ধ কর্মকর্তাদের তদন্তে নিয়োগ করতে পুলিশ প্রধানকে বলেছেন হাইকোর্ট’।

পর্যবক্ষণের পর ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যার দায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।

বিচারিক আদালতের পুরো রায়ের সঙ্গেই একমত হয়েছেন উচ্চ আদালত। ফলে মোহাম্মদ মাকসুদুল হাসান অনিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজের দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড বহাল রয়েছে। একইসঙ্গে বহাল রয়েছে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশও।
 
এছাড়া আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানির ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ড এবং আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদের ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘এ ধরনের (আসামিরা) মেধাবী ছাত্র বিপথে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পার। কেউ কেউ বলেন, অভিভাবকদের দায়। কারণ, অনেকে উচ্চশিক্ষিত। তারা কিভাবে লাইফস্টাইলকে আরও রিচ করা যায়, সেটি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সন্তানদের মানসিকতা ও তারা কোন দিকে যেতে চায়, কি বিষয়ে পড়ালেখা করতে চায়, সেটি বিবেচনায় না নিয়ে আভিজাত্যের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তাদের ওপর পড়াশোনাসহ অন্যান্য বিষয় চাপিয়ে দেওয়া হয়’।

‘তবে অভিভাবকরা সন্দেহাতীতভাবে সন্তানের প্রাথমিক শিক্ষক। এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব বহন করতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্টদের শিক্ষা, রাজনীতি, স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, ধর্মীয় সৌহার্দ্যপূর্ণ ঐতিহ্য—এসব বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে’।

জহিরুল হক জহির বলেন, ‘আজকের তরুণ বা মেধাবী ছেলেরা কেন বিপথগামী হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে সামাজিক শক্তিগুলোকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে। সন্তানদের গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে সময় দিতে, তারা যেন ভালোভাবে গড়ে উঠতে পারে, সেজন্য সচেষ্ট থাকতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।