ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নিম্ন আদালতে আপাতত যে পোশাক পরতে হবে বিচারক-আইনজীবীদের 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২০
নিম্ন আদালতে আপাতত যে পোশাক পরতে হবে বিচারক-আইনজীবীদের  ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দীর্ঘ চার মাস পর বুধবার (৫ আগস্ট) থেকে অধস্তন আদালতে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু হচ্ছে। কিন্তু করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মানতে হবে কিছু বিধি-নিষেধ।

   

এ বিষয়ে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ কল্পে এবং বিচারক, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক। কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধ কল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুরক্ষামূলক নির্দেশনাসমূহ সকলের অবশ্যপালনীয়। আদালত প্রাঙ্গণে সকলের সুরক্ষার জন্য উক্ত নির্দেশনার পাশাপাশি কয়েকটি নির্দেশনা সকলকে অবশ্যই যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।

নির্দেশনাগুলো হলো:

আইনজীবী-বিচারকদের পোশাক

কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধ কল্পে আদালত প্রাঙ্গণ এবং এজলাস কক্ষে প্রত্যেকে আবশ্যিকভাবে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করবেন। এজলাস, সাক্ষীর ডক এবং কাঠগড়ার প্রয়োজনীয় অংশে গ্লাস দিয়ে পৃথক পৃথক প্রতিরোধক প্রকোষ্ঠ প্রস্তুতের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বিচারকবৃন্দ ও আইনজীবীবৃন্দ সাদা শার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরিধান করবেন।

হাত ধোয়ার ব্যবস্থা

জেলা জজ/মহানগর দায়রা জজ/মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের প্রবেশ পথে এবং প্রকাশ্য স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা হিসেবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন স্থাপনসহ সাবান পানির ব্যবস্থা করবেন। আদালতে উপস্থিত প্রত্যেকে যথাসম্ভব নিজ নিজ নাক, মুখ এবং চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকবেন।

আদালত প্রাঙ্গণে এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে আবশ্যিকভাবে সার্বক্ষণিক মুখাবরণ এবং হাতমোজা পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। একই সময়ে আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে দফায় দফায় সাধারণ ছুটিরও মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে সরকার ৩০ মের পর সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও আদালত অঙ্গনে নিয়মিত কার্যক্রমের পরিবর্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কাজ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

এর মধ্যে গত ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্টে শুনানির জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হয়। পরদিন ১০ মে উচ্চ আদালতের সব বিচারপতিকে নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে ফুলকোর্ট সভা করেন প্রধান বিচারপতি। ওইদিনই নিম্ন আদালতের ভার্চ্যুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এরপর থেকে নিম্ন আদালতে ভার্চ্যুয়াল কোর্টে জামিন শুনানি শুরু হয়। ১১ মে প্রথমবারের মতো কুমিল্লার আদালতে এক আসামির জামিন হয়। পরে আত্মসমর্পণসহ বিভিন্ন মামলার শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়। পরে অবশ্য অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করা হয়।  

তবে আইনজীবীরা নিয়মিত আদালত চালু চেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করেন। এ অবস্থায় গত ৩০ জুলাই অধস্তন আদালত শারীরিকভাবে চালুর সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি।   

৩০ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এ মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে অধস্তন সব দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং ট্রাইব্যুনালগুলোতে ৫ আগস্ট থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।  

তবে এক্ষেত্রে সবাইকে ৩০ জুলাইয়ের জারিকৃত ১৩ নম্বর জে বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত আদালত প্রাঙ্গণ এবং এজলাস কক্ষে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত নিদের্শনা প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২০
ইএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।