ব্রিদিং এক্সারসাইজ আমাদের ক্লান্তি, অবসাদ দূর করে খেয়ালী মনের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করলে ত্বকের রক্ত চলাচল বাড়ে।
নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজের অভ্যাস থাকলে শরীর অনেকটাই টক্সিন মুক্ত থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ টক্সিনই ব্রিদিং এক্সারসাইজের সময় বেরিয়ে যায়। আর টক্সিনমুক্ত শরীর মানেই আপনি ফিট থাকার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেলেন।
আধুনিক জীবনযাপন আর স্ট্রেস হাত ধরাধরি করে চলে। স্ট্রেসের মোকাবিলা করার জন্য ব্রিদিং এক্সারসাইজের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত অভ্যাসে স্নায়ু, ও পেশিগুলো শান্ত হয়ে আসে। তাই যেকোনো পরিস্থিতিই আপনি ঠাণ্ডা মাথায় সামলাতে পারবেন। শরীরকে অনেকটা রিল্যাক্সডও রাখে।
নিয়মিত ব্রিদিং এক্সারসাইজ করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হয়। ফলে শরীরকে ব্যথা বেদনা তেমন কাবু করতে পারে না। শরীর অনেক ফ্লেক্সিবলও থাকে। এছাড়া হৃত্পিণ্ড, লিভার, প্যানক্রিয়াসের মতো শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোও ব্রিদিং এক্সারসাইজের ফলে, আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এ কারণেই সন্তানসম্ভবাদের জন্যও ব্রিদিং এক্সারসাইজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা অনেকটাই স্ট্রেস ফ্রি থাকবেন তো বটেই, শরীরও অক্সিজেনে ভরপুর থাকবে, যা এই সময় খুবই দরকার।
ব্রিদিং এক্সারসাইজ অনেক ধরনেরই হয়। এমনকি যোগ ব্যায়ামেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ব্রিদিং এক্সারসাইজ, যাকে আমরা প্রাণায়াম বলি। কপাল ভাতি, অনুলোম বিলোমের কথা তো আমরা সবাই জানি। তবে সঠিকভাবে ব্রিদিং এক্সারসাইজ না করলে কিন্তু এর উপকার পাওয়া মুশকিল।
প্রত্যেকটি ব্রিদিং এক্সারসাইজের কিছু আলাদা পদ্ধতি আছে। সেগুলো ঠিকমতো না শিখে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা একেবারেই উচিত্ নয়। কিছু সহজ ব্রিদিং এক্সারসাইজ আপনি বাড়িতেও ট্রাই করতে পারেন।
সুখাসনে শিরদাঁড়া টানটান করে বসুন। এবার ধীরে ধীরে পাঁচ গুণতে গুণতে নিশ্বাস নিন ও ছাড়ার সময়ও ধীরে ধীরে পাঁচ গুণতে গুণতে ছাড়ুন। খেয়াল রাখুন যতটা সময় নিশ্বাস নেওয়ার সময় লেগেছিল, ততটা সময়ই যেন নিশ্বাস ছাড়ার সময় লাগে। এভাবে ১০-১৫ বার এটি রিপিট করুন। এই এক্সারসাইজটি কিন্তু অনিদ্রার জন্য দারুণ উপকারী।
স্ট্রেসের মোকাবিলা করার জন্য সোজা হয়ে কোথাও স্থির হয়ে বসুন। সুখাসনে বা চেয়ারে বসে এই এক্সারসাইজটি করা ভালো। প্রথমে গভীরভাবে কয়েকবার শ্বাস নিন ও শ্বাস ছাড়ুন। এবার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে শরীরের প্রতিটি মাসলের ওপর পাঁচ সেকেন্ড মনোনিবেশ করুন। যখন যে মাসলের ওপর মন দেবেন, তখন সেটি যেন অনেকটা আলগা থাকে। পায়ের পাতা থেকে শুরু করাই ভালো। তবে এর সঙ্গে যেন শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্রিয়াটি সমান তালে চলতে থাকে। ১০ মিনিট এই এক্সারসাইজটি করলেই আপনার স্নায়ু অনেকটা শান্ত হয়ে আসবে।
মনে রাখবেন, মেডিটেশন কোনো ম্যাজিক নয়। ধীরে ধীরে পরিশ্রমের মাধ্যমে সবক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হয়। মেডিটেশন আমাদের চলার পথের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ভোরে কিংবা রাতে ঘুমের আগেও কিছুটা সময় ধ্যানের অনুশীলন করতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
এএটি