ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

নিয়মিত গান শুনলে ভালো হবে অসুখ!

লাইফস্টাইল ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
নিয়মিত গান শুনলে ভালো হবে অসুখ!

গান শুনতে কার না ভালো লাগে। গান আমাদের মনের খোরাক।

শুধু কী তাই? মন ভালো রাখার পাশাপাশি আরও অনেক উপকারিতা আছে গান শোনার। গবেষণায় বলছে, গান শোনার অভ্যাস থাকলে শুধু মন ভালো হয় না, সেই সঙ্গে একাধিক রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ভাববেন না একথা এই ২১ শতকে এসে খেয়াল পড়েছে বিজ্ঞানীদের। বিষয়টা জানা ছিল সেই ডারউইনের সময় থেকেই। শুধু প্রামাণ্য নথি ছিল না, এইটুকুই যা! এই বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে চার্লস ডারউইন একবার বলেছিলেন, ‘যদি আবার একবার জীবন ফিরে পাই, তাহলে দুটি কাজ অবশ্যই করবো।

একতো মনপসন্দ কবিতা পড়বে, আর দুই, গান শুনতে ভুলবে না। ’ একই মত ছিল আইনস্টাইনেরও। তিনিও বিবর্তনবাদের জনকের কথার রেশ ধরে বলেছিলেন, ‘আমি যদি গবেষক না হতাম, তাহলে অবশ্যই মিউজিশিয়ান হতাম। ’

এতদূর পড়ার পর নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে গান শোনার সঙ্গে শরীরের ভালো-মন্দের কি সম্পর্ক, তাই তো? তাহলে আর অপেক্ষা কেন, কানে হেডফোনটা গুঁজে, পছন্দের গান শুনতে শুনতে জেনে নিন না গানের গুণাবলি সম্পর্কে।

ক্রিয়েটিভিটি বাড়ে: আপনি কী লেখালেখি, ছবি আঁকা বা এই জাতীয় কোনো ক্রিয়েটিভ কাজের সঙ্গে যুক্ত? তাহলে তো প্রতিদিন কম করে এক ঘণ্টা গান শুনতেই হবে। কারণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে দেখা গেছে গান শুনলে মস্তিষ্কের বিশেষ একটি অংশ এতটাই অ্যাকটিভ হয়ে যায় যে ক্রিয়েটিভিটি বা অন্যরকমভাবে ভাবার ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।

মন ভালো হয়ে যায়: কাজের চাপে এখন তো আমাদের সবারই জীবন প্রায় প্রেসার কুকারের মতো হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ডিপ্রেশন এবং স্ট্রেসের হাত থেকে রক্ষা পেতে গান মহৌষধি হয়ে উঠতে পারে! কিন্তু কীভাবে? একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে গান শুনলে মস্তিষ্কের অন্দরে ডোপামাইন নামে একটি ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন অনন্দে ভরে যায়। তাই এবার থেকে যখনই মনে হবে মানসিক চাপ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখনই ১৫ মিনিট সময় বার করে পছন্দের কোনো গান শুনে নেবেন। দেখবেন নিমেষে মানসিক চাপের কালো মেঘ কেটে যাবে।

শরীরের উন্নতি হয়: একটা কথা খুব শোনা যায়, মিউজিকের মধ্যে নাকি হিলিং পাওয়ার আছে। কথাটি কী সত্যিই? একেবারেই! বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তো তাই বলছে। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, গান শোনার সময় স্ট্রেস হরমোন নামে পরিচিত, কর্টিজলের ক্ষরণ কমে যায়। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। ফলে সুস্থ জীবনের পথ প্রশস্ত হয়। দাঁড়ান দাঁড়ান যাচ্ছেন কোথায়! আরও কিছু বলার আছে! বেশ কিছু গবেষণাতে এও দেখা গেছে যে গান শোনার অভ্যাস থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। ফলে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

অনিদ্রা দূর হয়: বিখ্যাত জার্মান কবি বার্থহোল্ড অর্বেক এই বিষয়ে একবার বলেছিলেন, ‘সারা দিন ধরে যত ময়লা আমাদের আত্মার ওপর জমতে থাকে, গান সেই ময়লা সব ধুয়ে দেয়। ’ কী বুঝলেন! গান হলো সেই ওষুধ, যা কানের মধ্যে দিয়ে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা মাত্র ঘুম এসে যায়। তাইতো রাতে ঘুম আসতে না চাইলে ৩০-৪৫ মিনিট হালকা বিটের যেকোনো গান একটু শুনে নেবেন। দেখবেন অনিদ্রা লেজ তুলে পালাবে।

ডিপ্রেশনের প্রকোপ কমায়: পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বে মানুষ মানসিক অবসাদে ভুগছেন, যাদের মধ্যে অনেকের বাস আমাদের দেশে। এমন পরিস্থিতিতে গানের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। কারণ এ কথা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে যে ডিপ্রেশনের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি এ সম্পর্কিত নানাবিধ লক্ষণ কমাতেও গান বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে: নিশ্চয় ভাবছেন গানের সঙ্গে ওজন কমার কী সম্পর্ক, তাইতো? জর্জিয়া টেক ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক প্রমাণ করেছেন গান শোনার সঙ্গে ওজন কমার সরাসরি যোগ রয়েছে। আসলে গান শোনার সময় কোনো কারণে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমে। তাই এবার থেকে যখনই মনে হবে ওজন একটু বেড়েছে, তখনই হালকা আলোতে গান শুনতে শুনতে খাবার খাওয়া শুরু করবেন, দেখবেন উপকার মিলবে।

মস্তিষ্কের সক্ষমতা বাড়ে: নিউ ইংল্যান্ড বুকসেলার পুরস্কার পাওয়া বিখ্যাত আমেরিকান লেখিকা জোডি পিকোল্টের মতে, মিউজিক হলো স্মৃতিশক্তির নিজস্ব ভাষা। মানে! কথাটার মানে হলো গান শোনার সঙ্গে স্মৃতিশক্তির নিবিড়ড় যোগ রয়েছে। তাইতো জোডি এমনটা বলেছিলেন। আসলে গান শোনার সময় মস্তিষ্ক এত দ্রুত কাজ করতে শুরু করে দেয় যে স্মৃতিশক্তি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে কোনো কিছু শেখার ক্ষমতাও বাড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।