অফিসে কাজ বা বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহারের জন্য হোক, আমাদের দেরি করে রাতের খাবার খাওয়ার জন অজুহাতের অভাব হয় না। এর ফলে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে কত অজানা রোগ।
রাতে দেরি করে খাবার খেলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের আধিক্য বেড়ে যায়। যার জন্য মনের ওপর এর খারাপ প্রভাব দেখা যায়।
বেশি রাতে খাবার খাওয়ার আরও একটি অসুবিধা হলো ঘুমের সমস্যা। এছাড়াও সুগার লেভেল বেড়ে যায় দ্রুত, কারণ রাতে খাওয়া গ্লুকোজ শরীর ঠিকভাবে সংশ্লেষ করতে পারেনা। যে কারণে ডায়াবেটিসও হয়। খাবার যদি পেটে দেরি করে ঢোকে তবে শরীর ফ্রি রাডিক্যাল মুক্ত করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। যার ফলে কোষের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে, ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে।
অনেকক্ষণ ধরে ক্ষুধার্ত থাকলে আমাদের মেটাবলিক রেট স্লো হয়ে যায়। এরপর খাবার খেলেই তা চট করে বেড়ে যায় ফলে আমরা ওয়েট গেন করি।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যত বেশি রাত করে খাওয়া হয় ততই আমাদের শরীরের মধ্যে ইনসুলিন ও লেপ্টিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা বেশি করে চর্বি জমাতে সাহায্য করে।
এই সম্বন্ধে গবেষণা কী বলছে?
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন যে, অসময়ে খেলে বিশেষত রাতের বেলা যথাযথ সময়ের পর খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। যে কারণে ওজন বাড়ে, আর সেটাই ওবেসিটির দিকে ঠেলে দেয় মানুষকে।
একটি সমীক্ষা চালানো হয় সঠিক ওজনসম্পন্ন ৯ জন মানুষদের মধ্যে। যেখানে সকাল সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে তিনবেলা খাবার দিয়ে তাদের ওপর আট সপ্তাহ ধরে একটি গবেষণা করা হয়। এর মধ্যে কিছুজন রাত ১১টার পর খাবার গ্রহণ করেন। তাদের ক্ষেত্রে শারীরিক পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তাদের শরীরে গ্লুকোজ, হৃদরোগ ও ট্রাইগ্লিসারয়েডের মাত্রা বেড়ে স্বাস্থ্যের ব্যাধি দেখা দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক জানাচ্ছেন, রাতে দেরিতে খেলে মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব পড়ে ও স্মৃতিশক্তি ক্ষয় হয়। দুঃস্বপ্ন যারা দেখেন তাদের অধিকাংশই রাতে দেরি করে খেয়ে ঘুমাতে যান।
তুরস্কের ডকুস ইউনিভার্সিটির গবেষণা আবার বলছে, দেরিতে খেলে পরের দিন বেশি ক্ষুধা অনুভূত হয়। যা পরবর্তীতে বেশি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
এফআর