সারাদিনে কর্মব্যস্ততার পর একটু শান্তির পরশ পেতে ক্লান্ত শরীরটাকে যখন ম্যাট্রেস বা তোশকে এলিয়ে দেন, তখন বিছানাকে মনে হয় স্বর্গের মতো। বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ম্যাট্রেস।
পরিবেশবিদ ও ডাক্তাররা বলছেন, তোশক বা ম্যাট্রেস ব্যবহারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে।
তারা বলছেন, ম্যাট্রেস অনেক দিন ব্যবহারের ফলে সেখানে ডাস্ট মাইট ও অসংখ্য জীবাণু তৈরি হয়। এর ফলে একজন মানুষকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে ম্যাট্রেস। তাছাড়া অনেকে মনে করেন, ম্যাট্রেস নরম হলে ভালো। কিন্তু নরম ম্যাট্রেস আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। নরম ম্যাট্রেস শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিত্সক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, একদম শক্ত বা নরম ম্যাট্রেস আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকার। এতে কোমরের ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা হতে পারে। পিঠের ব্যথা হয়, ঘাড়ের ব্যথা হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, একটা ম্যাট্রেস অনেক দিন ব্যবহার করা যাবে না। দীর্ঘদিন একই ম্যাট্রেস ব্যবহার করলে সেখানে ডাস্ট মাইট ও জীবাণু তৈরি হয়। এটা আপনার অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে।
পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকরা বলছেন, ঘরের মধ্যে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ধুলা অ্যালার্জিক অ্যাজমার অন্যতম কারণ। তাতে মাইট নামক আর্থোপডজাতীয় জীব থাকে। মাইট বেড়ে ওঠার উপযুক্ত পরিবেশ হলো আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া। বিছানা, বালিশ, কার্পেট হলো মাইটের আদর্শ বাসস্থান। ধুলার মধ্যে মিশে থাকা মাইট শরীর থেকে নিঃসৃত রস লালা একসঙ্গে মানুষের শরীরে ঢোকে। একইসঙ্গে অ্যালার্জির প্রকাশ ঘটায়। পরে তা অ্যাজমায় রূপান্তরিত হয়। রাতে বিছানায় শোবার সময় মানুষ মাইটের সংস্পর্শে আসে। তাই রাতে হাঁপানির কষ্ট বেড়ে যায়।
ম্যাট্রেস পাল্টানোর সময় কখন—এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা জানান, আপনি যদি বিছানায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করেন, তখন বুঝবেন ম্যাট্রেসে সমস্যা হচ্ছে। আপনার যদি ঘুম থেকে ওঠার পর ঘাড়ে ও মেরুদণ্ডে ব্যথা হয় কিংবা চুলকানি হয় তাহলে বুঝতে হবে, ম্যাট্রেস পাল্টানোর সময় হয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের ম্যাট্রেসে অতিরিক্ত গরম হতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার পর ক্লান্তিভাব থাকতে পারে। এ ধরনের সমস্যা থাকলে বুঝতে হবে, আপনার ম্যাট্রেস পাল্টাতে হবে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে একই ম্যাট্রেস ব্যবহার করলে তার মান এমনিতেই খারাপ হয়ে যায়। এ কারণে পুরোনো ম্যাট্রেস পাল্টাতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫
এএটি