স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে অনেকে ডায়েট করেন। এটা করতে গিয়ে আমরা অজান্তেই পেশীর ক্ষতি করে ফেলি।
সম্প্রতি একটি কোরিয়ান ডায়েট বেশ চর্চিত হচ্ছে। এর নাম ‘স্যুইচ-অন ডায়েট’। কোরিয়া ছাড়িয়ে অন্যান্য অঞ্চলেও এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ, আবিষ্কারক চিকিৎসক পার্ক ইয়ং-উ-এর মতে, এই ডায়েট মেদ কমালেও পেশীর ক্ষতি করে না।
‘স্যুইচ-অন ডায়েট’ আসলে কী? সোজা ভাষায় এটি হলো খাবারের ধরন পরিবর্তন করে ডায়েট করা। এমন সব খাবার তালিকায় রাখা যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাবে কিন্তু পেশীর ক্ষতি করবে না।
এটি চার সপ্তাহের একটি ডায়েট, যা ধাপে ধাপে শরীরের মেটাবলিজম সক্রিয় করে এবং ফ্যাট কমায়।
স্যুইচ-অন ডায়েটে করণীয়:
• প্রোটিন শেকস: প্রতিদিন ৩-৪ বার প্রোটিন গ্রহণ।
• ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং: প্রতিদিন ১৪-১৬ ঘণ্টা উপবাস রাখা।
• কম কার্ব খাবার: চিনি, ময়দাসহ উচ্চ কার্বহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা।
• পেটের স্বাস্থ্য: প্রোবায়োটিকস ও সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ।
• ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা হাঁটা।
চার সপ্তাহের পরিকল্পনা:
প্রথম সপ্তাহে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ
প্রতিদিন চারবার প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। এজন্য বিভিন্ন ধরনের মাছ যেমন, রুই, পাঙ্গাস, মুরগির মাংস, মসুর ডাল, সয়াবিন ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। চাইলে প্রোটিন শেক পান করতে পারেন। সকালে খালি পেটে প্রোবায়োটিকস যেমন, দই খান এবং প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটুন।
দ্বিতীয় সপ্তাহে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং
দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে সকালে এক কাপ ব্ল্যাক কফি (চিনি ছাড়া) এবং দুইবার প্রোটিন শেক বা প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। সপ্তাহে একদিন উপবাস করুন। ওই দিন ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন। তবে মাঝারি ধরণের ব্যায়াম করা যেতে পারে। উপবাসের পর পুষ্টিকর খাবার খান।
তৃতীয় সপ্তাতে অন্তত দুইবার উপবাস
এই ডায়েটে তৃতীয় সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা উপবাস করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে পরপর দুইদিন উপবাস করা যাবে না। উপবাসের পর কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
চতুর্থ সপ্তাহে তিনবার উপবাস
চতুর্থ সপ্তাতে দুপুর ও রাতের খাবারে কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খান। দিনে দুইবার প্রোটিন শেক পান করুন। ওই সপ্তাহে তিনবার উপবাস করুন তবে পরপর তিন দিন উপবাস করবেন না।
শাকসবজি ও ফলমূল বেশি পরিমাণে খান
• স্যুইচ-অন ডায়েটে শাকসবজি ও ফলমূল গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি শাকসবজি (যেমন পুঁইশাক, সাগ, কাঁচামরিচ, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া) সহজলভ্য। এগুলো সালাদ, তরকারি বা সুপ হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
• ফলমূল যেমন: কলা, আপেল, আঙুর, পেপে, পেয়ারা, আমলকি ইত্যাদি খেতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর চর্বি ব্যবহার করুন
• রান্নায় স্বাস্থ্যকর তেল যেমন, অলিভ অয়েল, সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করুন। এই তেলগুলো ভালো চর্বির উৎস এবং শরীরের জন্য উপকারী।
• বাদাম, এ্যাভোকাডো, মাছের তেল থেকেও ভালো চর্বি পাওয়া যায়।
শর্করা (Carbs) নিয়ন্ত্রণ করুন
• শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা এই ডায়েটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে, সম্পূর্ণ শর্করা বাদ না দিয়ে, সঠিক ধরনের শর্করা খেতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, সাদা চালের চেয়ে ব্রাউন রাইস, গমের রুটি বা আটার রুটি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
চিনি, মিষ্টি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করুন।
(টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে)
এসএস