ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১০

জগত-খ্যাত বাঙালি চিত্র পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটকের ৮৫তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালে আজকের এই দিনে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন ঢাকার জিন্দাবাহার লেনে।

বাঙালি চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের সঙ্গে ঋত্বিককেও ২০ শতকের ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা চিত্র পরিচালক হিসেবে শ্রদ্ধা করা হয়।

তিনি নিজেকে ভারতীয় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র থেকে একেবারে আলাদা করে রেখেছিলেন। তাই চলচ্চিত্রের শিক্ষার্থী বা বুদ্ধিজীবী সমাজেই তার চলচ্চিত্রের কদর বেশি। তার পথ অনুসরণ করে মূলত তার ছাত্ররাই বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যকে বেগবান করে চলছেন। তবে তার সমকালীন আরো অনেক চলচ্চিত্রকারের মতো জীবদ্দশায় তিনি খ্যাতির দেবীর বর পাননি।

ঋত্বিকের বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক একাধারে ছিলেন কবি ও নাট্যকার। পেশায় ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। মা ছিলেন ইন্দুবালা দেবী। ঋত্বিক ছিলেন পরিবারে ১১তম ও কনিষ্ঠতম সন্তান। ১৯৪০ দশকে তৎকালীন পূর্ববাংলা থেকে দলে দলে উদ্বাস্তু কলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন।   তেমনি এক অবস্থায় পরিবারের সঙ্গে ঋত্বিক ঢাকা ছাড়েন। তাই তার চলচ্চিত্রগুলোয় উদ্বাস্তু-জীবনের বিভিন্ন দিক লক্ষ্য করা যায়।

১৯৪৮ সালে ঋত্বিক তার প্রথম নাটক ‘কালো সায়র’ লেখেন। ১৯৫১ সালে যোগ দেন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনে (আইপিপিএ)। তার লেখা শেষ নাটক ‘জ্বালা’ লেখেন এবং পরিচালনা করেন ১৯৫৭ সালে। ক্ষণজন্মা এই পূরুষ একাধারে লিখতেন, পরিচালনা করতেন এবং অভিনয়ও করতেন।

তার তৈরি প্রথম সমাপ্ত চলচ্চিত্র ‘নাগরিক’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫২ সালে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটি অন্যতম প্রধান একটি চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ঋত্বিকের চলচ্চিত্রে মঞ্চ, সাহিত্য ও প্রামাণ্যচিত্র্যের সংমিশ্রণ প্রবাদতুল্য।

তার প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’ মুক্তি পায় ১৯৫৮ সালে। হাস্য-রসাত্মক গল্পে ঘটেছে সায়েন্স ফিকশনের মেলবন্ধন। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটি এমন এক অভিনব ছবি যেখানে একটি গাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এর গল্প।

ঋত্বিক আটটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন। তার প্রসিদ্ধ ছবির তালিকায় রয়েছে ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০), ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬১) এবং ‘সুবর্ণরেখা’ (১৯৬২)। কলকাতার উদ্বাস্তু-জীবনের বিভিন্ন দিক তিনি তুলে ধরেছিলেন এই ট্রিলজিতে।

১৯৬৬ সালে কিছুদিনের জন্য পুনায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে শিক্ষকতা করেছিলেন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ায়। ১৯৭০-এর দশকে আবার ফিরে আসেন চলচ্চিত্র নির্মাণে। সেসময় বাংলাদেশি প্রযোজক হাবিবুর রহমান খান অর্থ লগ্নি করেন ঋত্বিকের বিখ্যাত ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এর জন্য। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। তার শেষ ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ (১৯৭৪) তারই আত্মজীবনী।

ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে ঋত্বিক অনেক স্বল্প ও পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি অসম্পন্ন রেখে কলকাতায় মারা যান করেন ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬ সালে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৯২৫, অক্টোবর ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।