ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

শীতের পোশাকের সঠিক যত্ন

লাবিন রহমান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১১

শীত মানে উল অথবা পশমি কাপড়। আর শীত এলে কণার রকমারি পোশাক পরতে ভালো লাগে।

কখনো উল বা কখনো লিনেন আবার কখনো বা পশমি কাপড়। শীত এলেই সে পোশাক কিনে আলমারি ভরতি করে ফেলে। তবে পোশাকের সঠিক যত্ন নিতে হলে প্রথমে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার জানা প্রয়োজন।

এখন শীত শেষ, আবার সব পোশাক তুলে রাখতে হবে এক বছরের জন্য। তাই  জেনে নেওয়া যাক শীতে পোশাকের সঠিক যত্ন নেয়ার উপায় :

  • শীতের কাপড় আলমারিতে ঝুলিয়ে রাখা ভালো।
  • শীতের কাপড় নিয়মিত রোদে শুকালে অনেক দিন পর্যন্ত টিকে। তবে কখনো কড়া রোদে শুকাবেন না।
  • শীতের কাপড় ওয়াশিং মেশিনে না পরিষ্কার করে নিজ হাতে ধোয়ার অভ্যাস করুন।

উল কাপড়ের যত্ন

  • উলের দামি জামাকাপড় ওয়াশিং মেশিনে না ধোয়াই ভালো। ঠান্ডা পানিতে অল্প ডিটারজেন্ট দিয়ে কাচুন।
  • উলের জামা  স্টোর করার সময় ভাঁজ না করে ঝুলিয়ে রাখুন।
  • জ্যাকেট বা কোট ঝুলিয়ে রাখার সময় কাঁধের অংশ প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখুন। এতে কাপড়ে ধুলো জমবে না।
  •  উলের জামাকাপড় বেশি ড্রাই ক্লিনিং না করাই ভালো। এতে উল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
  • উলের জামাকাপড় ভিজে গেলে ছায়ায় শুকিয়ে নিন। কড়া রোদে বা গরম তাপে না শুকানোই ভালো।
  • ইস্ত্রি করার সময় সোয়েটার বা শাল উলটে নিন। স্টিম দিয়ে ইস্ত্রি করার চেষ্টা করুন, গরম আয়রন উলে না লাগানোর চেষ্টা করুন।
  • শীতের কাপড় স্টোর করার সময় টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়ে কোনো ঠান্ডা জায়গায় রাখুন যেখানে বাতাস যাতায়াত করতে পারে।
  •  শীতের কাপড় স্টোর করার সময় কিছু ন্যাপথলিন বল একটা পুরোনো মোজায় ভরে আলমারিতে রাখুন।
  • উলের কাপড় পরার আগে প্রথমেই ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে পরিষ্কার করে নিন।
  • উলের কাপড় ধোয়ার জন্য কম ক্ষারযুক্ত সাবান, জেট পাউডার ও শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
  •  উলের কাপড় ধোয়ার সময় কখনই কাপড় ব্রাশ দিয়ে ঘষবেন না। এতে কাপড় নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে।
  • পশমি বা উলের কাপড় ইস্ত্রি করার সময় এর ওপর সুতির কাপড় বিছিয়ে নিলে কাপড় অনেক দিন ভালো থাকে।
  • উলের কাপড়ের প্রধান শত্রু  মথ পোকা। তাই যেখানে উলের কাপড় রাখবেন, সেখানে কিছু শুকনো নিমপাতা ছড়িয়ে রাখুন।

পশমি কাপড় বা লেদার কাপড়ের যত্ন

  • লেদারের কাপড় বাড়িতে পরিষ্কার করা ঠিক না। ভালো কোনো লন্ড্রিতে পাঠান।
  • কয়েক বছর পরপর লেদারের জামাকাপড়ের ভিতরের লাইনিং বদলানো খুবই জরুরি।
  • লেদার যদি খুব পাতলা হয় তা হলে হোয়াইট টিস্যুর প্যাডিং দিতে ভুলবেন না।


লিনেন কাপড়ের যত্ন

  • লিনেন কাপড়ের সোয়েটার বা জামা কিছু দিন পর পরই কাচুন। বেশিদিন না কেচে ব্যবহার করবেন না।
  • সাদা লিনেন গরম পানিতে কাচবেন আর রঙিন লিনেন অল্প গরম পানিতে কাচবেন।
  • লিনেন কাপড় ওয়াশিং মেশিনে না শুকিয়ে, দড়িতে শুকাতে দিন।
  • লিনেন কাপড় কাচার পর পানি ঝড়িয়ে, একটু ভিজে ভিজে অবস্থায় ইস্ত্রি করুন
  •  লিনেনের জামাকাপড় স্টোর করার সময় রোল করে রাখুন। পরিষ্কার পুরনো কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখুন।


জামাকাপড়ের সঠিক যত্ন না করলে আপনার শখের জামা সহজে নষ্ট হয়ে যাবে। আসুন জেনে নিই জামাকাপড় টেকসই রাখার কিছু সহজ উপায় :

  • কাপড় কেনার সময় টেকসই ও ভালো মানের কাপড় কিনুন।
  • পোশাকে দাগ লাগলে সাথে সাথে ব্যাবস্থা নিন। বেশিদিন ফেলে রাখলে দাগ সহজে উঠতে চায় না।
  • জামাকাপড়ে ছোটখাট ছেঁড়াফাটা বা বোতাম খসে যাওয়া দেখলে অবহেলায় ফেলে রাখবেন না।
  • কাপড়ে ব্লিচ যত কম ব্যবহার করা যায় তত ভালো। শুধু সাদা কাপড় উজ্জ্বল করার জন্য আর দাগ তুলতে ব্লিচ ব্যবহার করুন।
  • কাপড়ে বার বার মাড় লাগাবেন না। বার বার কাপড়ে মাড় ব্যবহার করলে কাপড়ের ক্ষতি হয়।
  • রান্না করা বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার সময় এপ্রোন ব্যবহার করুন।
  • প্রয়োজন ছাড়া কাপড় কাচবেন না। বেশি বেশি কাপড় কাচলে কাপড়ের ফ্যাব্রিক দুর্বল হয়ে যায়।
  • চাদর বা শাল ভাঁজ করে তারপর গোল করে মুড়িয়ে রাখলে অনেক দিন টিকে।
  • রঙিন কাপড় ধোয়ার বেলায় ভিনেগার মিশিয়ে নিন। রঙিন এতে কাপড়ের ঔজ্জ্বল্য ঠিক থাকবে।
  • কাপড় নিয়ে টানাটানি করবেন না।
  • বাচ্চাদের ছোট থেকেই কাপড়ের যত্ন নিতে শেখান।

আমাদের দেশে শীত থাকে দুই মাসেরও কম। তাই সঠিক নিয়মে শীতের কাপড়ের যত্ন নিলে অনেক দিন পর্যন্ত কাপড় স্থায়ী হবে। শীতের কাপড় নষ্ট বা পুরনো হয়ে গেলে ফেলে না দিয়ে অসহায় মানুষদের দান করে দিন। এটা হয়তো তার উপকারে লাগবে।

বাংলাদেশ সময় ১৫৫৫, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।