জুনিয়র হাইস্কুলে পড়ার সময় এক নাচের ক্লাসে এই দম্পতির প্রথম চার চোখের মিলন হয়। তখন তাদের বয়স মাত্র ১১।
অবশেষে ৯ বছরের প্রেম শেষে চেরনোফ দম্পতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ২০ বছর বয়সে। ৬০ বছরের দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করে ৮০ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের এক দম্পতি এখনও সুখী জীবন যাপন করছেন। সুখের সংঙ্গা বিভিন্ন জনের জন্য বিভিন্ন হলেও এই দম্পতির দীর্ঘ দিনের সুখের রহস্য জানতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
একসঙ্গে প্রায় সমস্ত জীবন পেরিয়ে তাদের বয়স এখন ৮০। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের পরিবারেও এসেছে আরও নতুন মুখ। তাদের হাত ধরে পৃথিবীতে এসেছে দুই সন্তান, পাঁচ নাতি আর এক পুতি। কিন্ত একসঙ্গে এতটা পথ পেরিয়ে এলেও তাদের জীবনে সুখ আর আনন্দের যেনো কোন ঘাটতি নেই।
কি তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের রহস্য?
দীর্ঘ চলার পথে তারা ১১ বছর বয়সের একটি অভ্যাস এখনও বিসর্জন দেননি। তারা এখনও ভোর সাড়ে ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে একত্রে নাচেন।
‘আমাদের পছন্দ ডিসকো আর জিতারবাগিং, রেডিওতে যতক্ষন আমাদের পছন্দের গান চলতে থাকে ততক্ষনই আমরা নেচে যাই’, জানালেন বেটি চেরনোফ ।
সুখী দাম্পত্য জীবনের রহস্য জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা সকালে নাস্তার সময় কখনও পত্রিকা পড়িনা, এ সময় আমরা একে অপরের সঙ্গে গল্প করি।
তার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে লুইস চেরনোফ বলে ওঠেন ,‘আমাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া চমৎকার । যখন বেটির কোনকিছু করতে ইচ্ছা করে ঠিক তখনই আমিও তাই করতে চাই’।
তবে তারা এই শিক্ষা নিয়েছিলেন তাদের বাবা মার কাছ থেকে। এ প্রসঙ্গে বেটি চেরনোফ বলেন ,‘আমার মা-বাবা পিচ আর ক্রিমের মতো একসাথে জোড়া লেগে থাকতেন। যে কেউই এই উদাহরণকে অনুসরন করে সুখি হওয়ার চেষ্টা করতে পারে’।
তবে সুখী দাম্পত্য জীবনের পেছনে যে পুরুষের কাঁধের ওপর একটি বুদ্ধিমান ও কৌশলি মাথা থাকতে হয় তা মনে করিয়ে দিতে ভুললেন না লুইস চেরনোফ ।
তিনি বলেন,‘আমরা কম বয়সে বিয়ে করেছিলাম, কিন্তু আমরা এখনও টিকে আছি। এই কৌশল কাজে লাগাতে হলে তোমার কাঁধেও একটি বুদ্ধিমান মাথা থাকতে হবে। যা এখন ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যেও নেই’।
আজকের এই গতিশীল জীবনে স্থিরতা বিলীন। এর প্রভাবে মানুষ তার দাম্পত্য জীবনেও স্থির হতে পারছেনা। সব কিছু থাকা সত্বেও যেন মানুষ বিচ্ছিন্ন । অনেক সময় একান্ত সঙ্গীকেই মনে হয় অচেনা, বহুদূরের কেউ।
জীবনের বহু পথ পেরিয়ে আসা বেটি এবং লুইস চেরনোফের জীবন সুখের আনন্দে কানায় কানায় পূর্ণ। তাদের জীবন থেকে ভালো দিকগুলো নিয়ে চেষ্টা করে আমরাও দেখতে পারি দাম্পত্য জীবনে সুখের সমুদ্র আরও বিস্তৃত করা যায় কি না। প্রয়োজন শুধু সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি আর একটুখানি সদিচ্ছার।