জীবনবৃত্তান্ত বা সি ভি হচ্ছে একজন চাকরিদাতার কাছে চাকরিপ্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করার প্রাথমিক মাধ্যম৷ আজকাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। সেক্ষেত্রে চাকরিদাতা প্রথমে সি ভি দেখেন।
যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্বেও সি ভি তৈরিতে সঠিক গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেক যোগ্য প্রার্থীই চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। আপনার সাফল্য, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং গুণাবলী সবকিছুই সংক্ষেপে তুলে ধরতে হবে সি ভি তে।
- আর তাই আপনার স্বপ্ন পূরণের চাকরিটি পেতে হলে প্রথম ধাপ হচ্ছে সুন্দর একটি সিভি তৈরি করা।
- সি ভিতে, ক্যারিয়ার সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করুন
আপনি যদি একাধিক পদের জন্য আবেদন করেন, তবে প্রতিটি পদ আলাদা করে নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। - অস্পষ্ট ভাসা ভাষা কোনো শব্দ সিভিতে ব্যবহার করবেন না। যে বিষয়গুলো আপনি নিয়োগকর্তাকে জানাতে চান সেসব নির্দিষ্ট এবং সঠিক তথ্য দিয়ে সিভি তৈরি করুন।
- সি ভি তৈরিতে খুব কঠিন শব্দ ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকুন
- চাকরির শুরুর পর থেকে কোনো সময়ে চাকরিতে না থাকলে কেন সে সময়ে চাকরি করেননি তা ছোট করে উল্লেখ করুন।
- আপনি কি সম্প্রতি একটি পুরস্কার পেয়েছেন? অথবা কাজের কোনো স্বীকৃতি যাই হোক ইতিবাচক সব কিছু দিয়ে নিয়মিত সিভি আপডেট রাখুন
- পেশার শিরোনাম, ডিগ্রি, নাম এবং যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো বোল্ড করে দিন
- সিভি তৈরিতে রঙিন কালি ব্যবহার করবেন না
- সংক্ষিপ্তভাবে সুস্পষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সিভি তৈরি করতে হবে৷ অপ্রয়োজনীয় বা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ দিতে পারেন
- একজন সদ্য পাস করা চাকুরীপ্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত দুই পাতার বেশি হওয়া উচিত নয়
- সি ভিতে বানান বা ভাষাগত ভুল আপনার সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে৷ এজন্য সি ভি হতে হবে নির্ভুল।
সি ভি তৈরি করার সময় যে বিষয়গুলো উল্লেখ করতে হয়
ছবি: সি ভি-তে অবশ্যই যে পদের জন্য আবেদন করছেন সেই পদ এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছবি দিন। ছবিতে যেন আপনার রুচি এবং ব্যক্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়।
শিরোনাম: পুরো নাম, বর্তমান ঠিকানা, ফোন নম্বর ও ই-মেইল৷
ক্যারিয়ার উদ্দেশ্য: আপনার চাকুরীক্ষেত্রে বর্তমান লক্ষ্য উল্লেখ করুন এবং যে প্রতিষ্ঠানে সি ভি পাঠাচ্ছেন, সেখানে আপনার যোগ্যতা কীভাবে তার প্রয়োজন মেটাতে পারে ইতিবাচকভাবে সেগুলো উলেখ করুন৷
চাকরির অভিজ্ঞতা: প্রতিষ্ঠানের নাম, পদবী, সময়কাল, দায়িত্ব, উল্লেখযোগ্য সাফল্য। বর্তমানে যে পদে আছেন প্রথমে সেটি উল্লেখ করুন। এরপর যদি আপনি একই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে কাজ করে থাকেন, তাহলে আলাদা আলাদা ভাবে তা উল্লেখ করুন৷
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ডিগ্রির নাম, কোর্স সময়কাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বোর্ডের নাম এবং ফলাফল৷
প্রশিক্ষণ: আপনি যদি কোন বিশেষ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং যদি তা আপনার কাজের যোগ্যতার সহায়ক বলে মনে করেন তবে তা উল্লেখ করবেন৷ সেক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, বিষয়, প্রতিষ্ঠানের সময় তারিখ উল্লেখ করবেন ৷ প্রশিক্ষণের তালিকা আপনি শিক্ষাগত যোগ্যতার অংশের শেষে দিতে পারেন৷
অতিরিক্ত তথ্য: পেশাগত অর্জন, পদক/ সম্মাননা, ভাষাগত ও কম্পিউটারে দক্ষতা, লাইসেন্স, সরকারি পরিচয়পত্র, প্রকাশিত লেখা ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড।
ব্যক্তিগত তথ্য: পিতামাতা, বর্তমান/স্থায়ী ঠিকানা, ধর্ম, বৈবাহিক অবস্থা, যে সকল দেশ আপনি ভ্রমণ করেছেন, শখ ইত্যাদি এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে৷
রেফারেন্স: নিকট আত্মীয়দের নাম রেফারেন্সে উল্লেখ করবেন না৷ আপনাকে আপনার ছাত্র জীবনে বা কর্মজীবনে কাছ থেকে দেখেছে এমন ব্যক্তিকেই আপনি রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করবেন৷ অবশ্যই যাদেরকে রেফারেন্স দেবেন তাদের ফোন নাম্বার, ঠিকানা এবং ই-মেইল উল্লেখ করবেন৷ যাদের নাম রেফারেন্সে দিচ্ছেন তাদের বিষয়টি জানিয়ে অনুমতি নিয়ে নিন।
ঝকঝকে সুন্দর একটি সিভি তৈরি করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে চাকরির আবেদন করতে শুরু করুন। দেখবেন খুব দ্রুতই কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে স্বপ্নের পদবীটি হবে আপনার।