ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা গাজী

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৩
সফল নারী উদ্যোক্তা ফারজানা গাজী

ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকি করতে ভীষণ ভালো লাগত মেয়েটির। তখন মাত্র এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করেছেন।

শখ করে আত্বীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে ডেকোরেশন করতে পছন্দ করতেন। তখন ইন্টেরিয়র সবেমাত্র আমাদের দেশে চালু হয়েছে। কিন্তু একেতো এটা নতুন পেশা তার ওপর মানুষের স্ব”ছ তেমন ধারণাও ছিল না।

ভাল ছাত্রী হওয়ার কারণে বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু মেয়ে যে রক্ত দেখলে প্রচণ্ড ভয় পায় সে কথা বোধ হয় বাবার জানা ছিল না। কি আর করা, মেয়ের আর ডাক্তার হয়ে ওঠা হয়নি। কথা বলছিলাম ফারজানা’স ব্লিস্ এর সত্ত্বাধীকারি ও ডিজাইনার  ফারজানা গাজীকে নিয়ে।

যিনি অন্যের কাজগুলো সানন্দে নিজের কাঁধে তুলে নিতে ভালবাসেন।

ফারজানা গাজী দি পিপলস্ ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর চার বছরের বিএসসি অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস থার্ড পে¬স করাতে ইউনিভার্সিটি থেকে লেকচারের অফার পেলেন। কিন্তু একটু বোরিং লাগাতেই তখন আর ইচ্ছা হলো না নিজেকে সেখানে বেঁধে রাখতে। ভালো লাগবে কী করে, ছোটবেলা থেকেই যে মেয়েটি শৌখিন এবং শিল্পীমনের অধিকারী, সবসময় নেশায় থাকত নানা ধরনের ক্রিয়েটিভ কাজ, তার কী আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মন টেকে?

তাই বাইরের একটা অরগানাইজেশন থেকে ১ বছরের ডিপ্লোমা শেষ করেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ওপর। কিš‘ শেখারতো আসলে শেষ নেই। পরবর্তীতে আবার ১ বছরের ডিপ্লোমা করেন রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন থেকে। এরপর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে তিনি আলকভের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, সারওয়াত ইন্টেরিয়ার এন্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চিফ কন্সালট্যান্ট, রেডিয়েন্ট ইনিস্টিটিউট অব ডিজাইনের হেড অব এডমিন হিসেবে কাজ করেছেন।

আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে নিজের অনুপ্রেরণার জায়গার কথা জানতে চাইলে ফারজানা বলেন, আমার মা অনেক শৌখিন এবং শৈল্পিক মনের একজন মানুষ তাকে দেখেই এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পেয়েছি।

ইন্টেরিয়র ডিজাইনকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে ফারজানা বলেন, আসলে আমাদের দেশে ডিজাইনারদের মূল্যায়ন কম। অথচ বিদেশে একজন ডিজাইনারকে অনেক বেশি সম্মান ও মূল্যায়ন করা হয়, যেহেতু আমাদের দেশের মানুষের কাছে এই পেশা সম্পর্কে তেমন স্বচ্ছ ধারণা নেই, তাই আমার মনে হয়েছে কাউকে না কাউকে তো নিতে হবে এর দায়িত্ব, তারই প্রচেষ্টা এটা। আমার কাছে ইন্টেরিয়র ডিজাইন পেশাটা যথেষ্ট সম্মানজনক একটি পেশা মনে হয় এবং কিছু চ্যালেঞ্জিংও বটে। আর আমাদের দেশে এই পেশার ভবিষ্যত এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এই পেশার গ্রহণযোগ্যতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে এই পেশাটা বেশ জনপ্রিয়। ইন্টেরিয়র ডিজাইন পেশা কেবল আধুনিক নয়, সময়োপযোগী এবং সম্মানজনকও বটে। দরকার শুধু সময়মতো দিক নির্দেশনা।

আর নতুন যারা ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ে আসছে তাদের কাজ অনেক ভালো হচ্ছে। তারা শুধু বিদেশি নয়, আমাদের দেশীয় মেটেরিয়াল ব্যবহার করেও অনেক ভালো এবং নান্দনিক কাজ করছেন। নতুনদের ভালো করার জন্য আমার পরামর্শ একটাই, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি থাকতে হবে আন্তরিকতা দক্ষতা, সৃজনশীলতা, আগ্রহ, ধৈর্য, মনোযোগ, সর্বোপরি অন্যের পছন্দকে বোঝার ক্ষমতা থাকা।

নিজের স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে ফারজানা বলেন, নারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে সুযোগ করে দিতে চাই। কারণ আমাদের দেশে নারীরা অসহায় এবং বঞ্চিত। নারীদের উত্সাহিত করার জন্যই আমার এই ছোট্ট উদ্যোগ। দেশকে ভালোবেসেই দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।

ফারজানার স্বর্গ রাজ্যে আছে ইন্টেরিয়র ডিজাইন, ফ্যাশন ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, জুয়েলারি ডিজাইন, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, আইকেবানা, বনসাই প্রভৃতি। সবার মাঝে ঘর সাজানোর সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে ফারজানা বাংলানিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে নিয়মিত লেখেন।

আপনার চারপাশের সফলদের কথা আমাদের জানান...
[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।