ছোটবেলায় সাধারণ জ্ঞানে পড়েছিলাম “কাশ্মীর"কে পৃথিবীর ভূ-স্বর্গ বলা হয়। তখন সেটা পড়ার জন্যই পড়তাম।
আমরা ছয় বন্ধু মিলে প্ল্যান করলাম ভূ-স্বর্গে (কাশ্মীর) ভ্রমণ করার। যথারীতি অনলাইনে ভিসা আবেদন করলাম। ভাগ্যবশত সবাই ৩ মাসের ভিসা পেয়েও গেলাম।
দিনক্ষণ ঠিক করে চড়ে বসলাম কলকাতার বাসে। কলকাতা রাত যাপন করে পরদিন ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বিমানবন্দর (দমদম বিমানবন্দর) থেকে প্লেনে চেপে রওনা দিলাম জম্মু কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে। কলকাতা থেকে সরাসরি শ্রীনগর উড়োজাহাজ নেই। সেটা দিল্লিতে দুই ঘণ্টার যাত্রাবিরতি দিয়ে অন্য প্লেনে করে ১টা ৩০ মিনিটে শ্রীনগর বিমানবন্দর এসে পৌঁছলাম। তাপমাত্রা নিয়ে আগেই একটা শংকা ছিল মনের মধ্যে। প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে তার সত্যতা মিলল। সম্ভবত ১০ ডিগ্রি হতে পারে।
20131024013754.jpg)

দ্বিতীয় দিন ভোরে আমরা রওনা দিলাম কাশ্মীরের বিশেষ জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম পেহেলগাম-এ।
ডাললেক থেকে ১২০ কি.মি দুরত্বে অবস্থিত। যেতে ২ ঘণ্টা সময় লাগলো। রাস্তার দুইপাশের সৌন্দর্য্যগুলো চোখে লেগে থাকার মত। মাইলের পর মাইল আপেল বাগান। ক্রিকেট ব্যাটের সারি সারি কাঠ গাছ। রাস্তার দুই পাশে ক্যাসর (জাফরান) বাগান দেখতে আমাদের দেশের সরিষা খেতের মত অনেকটা। পেহেলগাম গিয়ে ঘোড়ায় চড়ে মিনি সুইজারল্যান্ড পৌঁছানো আমাদের জন্য ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর। ঘোড়ায় চড়ে বসলে বরফের পাহাড় বেয়ে আপনাকে চূড়ায় নিয়ে যাবে কোন সাহায্যকারী ছাড়াই। আপনাকে শুধু ঘোড়ার লাগামটা ঠিকভাবে শক্ত করে ধরে রাখতে হবে। ‘যাব তাক হে জান’ এর শুটিং স্পটটাও ছিল দেখার মত।

৪র্থ দিন ভোরে সোনামার্গ-এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মিশন কাশ্মীর সিনেমাসহ অনেক সিনেমায় শুটিং স্পট সত্যিই না দেখলে বিশ্বাস করা অনেকটা কঠিন। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না কাশ্মীরের অপরূপ সৌন্দর্য।

কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা। কলকাতা থেকে আপনি ট্রেনে করে অথবা প্লেন যোগে যেতে পারেন। প্লেনে গেলে আপনার খরচটা একটু বেশি হলেও সময় অনেক কম লাগে। কলকাতা থেকে প্লেন যোগে দিল্লি হয়ে শ্রীনগর যেতে ৬ ঘণ্টা লাগবে ।
থাকার জন্য শ্রীনগর ডাললেকে অনেক সুন্দর সুন্দর হোটেল আছে। তাছাড়া চাইলে আপনি হাউসবোটেও থাকতে পারেন। সেগুলো আগে থেকে বুকিং করার প্রয়োজন নেই।
লেখক পেশায় একজন প্রকৌশলী
এসএস