ডিগ্রি পাস করে অনেক দিন থেকেই শুভ কিছু করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোথাও একটা চাকরির ব্যবস্থা করতে পারছে না।
একদিন এক বন্ধু তাকে বাতলে দিল সাবলম্বী ও একই সঙ্গে খুব দ্রুত ধনী হওয়ার পথ। শুভ যেন আকাশের চাঁদ পেল। যেই কথা সেই কাজ। প্রতিদিন বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা এনে কী যেন দেখে। আসলে শুভ কী খুঁজছে?
শুভ বিদেশি অভিবাসী পাত্রী খুঁজছে। কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড হলে তো কথাই নেই। এক্ষেত্রে পাত্রীর বয়স, চেহারা, সন্তান, কোনো কিছুই সমস্যা নয়। প্রয়োজন শুধু বিয়ের কাগজ আর যত দ্রুত সম্ভব প্লেনে ওঠা।
পাত্র পাত্রী চাই এমন বিজ্ঞাপন আমরা প্রতিদিনের পত্রিকায় দেখে থাকি। তাই শুভকে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না। পত্রিকা থেকে কয়েকটি নম্বর নিয়ে সে বসে গেল যোগাযোগ করতে। বলে রাখি, এই ফোন নম্বরগুলো কিন্তু পাত্রী বা তার পরিবারের কারও নয়। এখানেও রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগী, মানে মিডিয়া সেন্টার। মিডিয়া সেন্টারে যোগাযোগ করে শুভ এক কানাডা প্রবাসী ডেভোর্সি পাত্রীর খোঁজ পেল। সে এতেই খুশি। তবে এতো ভালো দেশে যাবে পাত্রী এবং মিডিয়া সেন্টারের দাবি পাঁচ লাখ টাকা। শুভ তার বাড়িতে বিষয়টি জানালে পরিবারের সবাই ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একমাত্র ফসলের জমি বিক্রি করে টাকা দেয়। শুভ সব টাকা এনে মিডিয়ায় জমা দিয়ে আসে। এবার বিয়ের দিন ঠিক হওয়ার অপেক্ষা।
সে নিয়মিত মিডিয়ায় যোগাযোগ করতে থাকে। কিন্তু অপেক্ষা আর শেষ হয় না, বিয়েও হয় না। হঠাৎ একদিন, মিডিয়া সেন্টারে ফোন করে পাওয়া যায় না, পরে অফিসে এসে দেখে গেটে তালা। এরপর শুভর পরিণতি...
আমাদের সমাজে শুভর মতো অনেকেই বিয়ে করে বিদেশে যাওয়ার নামে, এমন চক্রের কাছে প্রতারিত হচ্ছেন। এদের ঠেকাতে গণমাধ্যম, প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর এসব মিডিয়ার চটকদার বিজ্ঞাপনের প্রলোভন থেকে দূরে থাকতে হবে।
বন্ধুরা আরও নানা বিষয়ে জানতে ও আপনার মতামত জানাতে https://www.facebook.com/bnlifestyle
লাইফস্টাইল বিভাগে লেখা পাঠাতে পারেন [email protected]