জয়া আর লাভলী একসঙ্গে পড়াশোনা করে, এক হলে থাকে। জয়া কিছুটা চুপচাপ শান্ত।
যেমন জয়ার হয়তো ক্লাস আছে, সে ক্লাসে যাবে আর লাভলী যাবে শপিং-এ, জয়াকে সঙ্গে নিতে চায় লাভলী। জয়া বুঝিয়ে বলে তার ক্লাসে যাওয়া জরুরি। কিন্তু কে শোনে কার কথা, তাকে একরকম জোর করেই নিয়ে যায় লাভলী। আবার দেখা গেল শপিং করতে করতে লাভলীর সব টাকা শেষ। এরপর জয়ার কাছ থেকে টাকা নিয়ে সে দিব্যি খরচ করছে…জয়া কিছু বলতে পারছে না। সে চিন্তায় পড়ে যায় সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে। জয়ার পরিবারের অবস্থাও অনেক স্বচ্ছল কিন্তু সে কখনো অপচয় করে না। আর বাবা মাকে বলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা কখনোই নেয় না। অন্যদিকে লাভলী পুরোটাই তার ব্যতিক্রম।
জয়ার এই লাভলী ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে, তার যা পছন্দ নয় এমন কিছু করতে বললে শক্ত করে ‘না’ বলা। জয়ার মতো যাদের না বলতে দ্বিধা হয়, পাছে সে কি মনে করে, তার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাবে এই ভেবে, তাদের সরলতার সুযোগ নেয় পরিবার-বন্ধু, সহকর্মীসহ অনেকেই।
আপনার অবস্থা যদি জয়ার মতো হয়। তবে জেনে নিন বিনয়ের সঙ্গে না বলতে। এতে যাকে না বলছেন তিনিও বুঝতে পারবেন আপনার অপরগতার কথা।
তাকে বলুন, আমার সত্যি খুব ভালো লাগতো, যদি আপনার প্রয়োজনের সময় সাহায্যে আসতে পারতাম কিন্তু আমার নিজেরও এই মূহুর্তে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেজন্য আসলে কিছু করতে পারছি না, তবে এই না পারার জন্য নিজেই লজ্জিত হচ্ছি।
আত্মবিশ্বাস বাড়ানোটাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ভাবে সরাসরি ‘না’ বলতে পারাও মাঝে মধ্যে জরুরি হয়ে পড়ে, বিশেষ করে তখন, যখন কেউ দিনের পর দিন বোকা ভেবে আপনার কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করছে।
সম্পর্ক যেমন একতরফা হয় না। তেমনি দেয়া নেয়ার বিষয়টিও শুধু একতরফা হওয়া ঠিক নয়। আপনি ইচ্ছা করে কিছু দিতেই পারেন প্রিয়জনকে। কিন্তু যদি দেখেন সামর্থ থাকতেও সে আপনার কাছ থেকে শুধুই নিচ্ছে, তখন আপনাকে বুঝতে হবে ইনি সঠিক ব্যক্তি নয়...তা সে আত্মীয়, বন্ধু বা সহকর্মী যেই হোক।
আর একটা কথা, যদি বুঝতে পারেন কেউ আপনার সরলতার সুযোগ নিচ্ছে, তবে আপনিই তার সঙ্গ ত্যাগ করুন। কারণ সরল হওয়া নিশ্চয় ভালো তবে বোকামী করা কিন্তু ঠিক নয়।