ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

মনসুরের জন্য বন্ধুর আকুতি

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
মনসুরের জন্য বন্ধুর আকুতি

জীবনে ঝড় আসবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে সে ঝড় যখন সব কিছু তছনছ করে দিয়ে যায় তখন তা মেনে নেয়া যায় না।

তবু উঠে দাঁড়ানোর তো চেষ্টা করতে হয়।

মনসুর আমাদের বন্ধু। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবার চাকরীরসুবাদে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল-কলেজেই তার লেখা পড়ার শুরু। সেখানকার সবার প্রিয় মুখ মনসুর এইচএসসি পাশ করে ২০০৬সালে ভর্তি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে।

শান্ত, হাস্যজ্জল মনসুরের সাথে ক্যাম্পাসেই পরিচয়। মনসুরের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ঘোরাঘুরি নিয়েই। দেখা হলেই আমাদের বেশিরভাগ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো ঘোরাঘুরি। ক্যাম্পাসের শেষের দিকে খুব একটা দেখা হতোনা। কেননা ততোদিনে তার জীবনের ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে।

মনসুরের পুরোটা জীবনই সংগ্রামের ইতিহাস। মা তাদের ছেড়ে গিয়েছে ২০০৬ সালেই। স্নাতকের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই ২০০৯ সালে তাদের পাঁচ ভাই বোনকে রেখে বাবা পৃথিবী ছেড়ে যান। এমন অবস্থায় গুরু দায়িত্ব এসে বর্তায় মনসুরের ঘাড়ে। যে সময়টা আমরা গল্প-আড্ডা আর ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত সে সময় সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির চাকরি নিয়ে সংসার সামলাতে ব্যস্ত। তবু থেমে থাকেনি তার স্বপ্ন। এঅবস্থাতেও একটু সুযোগ পেলে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করতো। ঘোরাঘুরি যে তার আত্মার সাথে। থেমে থাকেনি তার ক্যারিয়ার ভাবনাও। চাকরির পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে মনসুর অফিসার হিসেবে যোগ দেয় পূবালী ব্যংকে।

প্রায় গুছিয়ে নিয়ে আসে এলোমেলো সংসার। এক বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে।   অন্য দু বোন যথাক্রমে স্কুল, কলেজ গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে এগিয়ে চলছে। একমাত্র ছোট ভাইটা হাই স্কুলে পড়ছে। গুছিয়ে আনার স্বস্তি তার সাথী হলোনা বেশিদিন। হঠাৎ করেই শরীর খারাপ হতে শুরু করে মনসুরের। সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ধরা পড়লো মনসুর প্রাণঘাতী ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত।

ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পর প্রথম ফেইসবুকে নিজের ছবি পোস্ট করে মনসুর। এ কোন মনসুর! চেহারা দেখে কেউ চেনার কথা না। ঠিক মেনে নিতে পারিনি। নিজেই জানায় তার ক্যন্সারের কথা। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি একথা শুনে। একটা মানুষ জীবনে কত আর সংগ্রাম করে যাবে!
ভেঙ্গে পড়েনি মনসুর। ঝড় ঝাপ্টা যে জীবনে তার নিত্যসঙ্গী। মনসুরকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে তার স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুরা। প্রয়োজন পাশে থেকে সাহস দেয়া আর সর্বোপরি টাকার।

ভারতের টাটা মেডিকেলে চিকিৎসারত মনসুরকে বাচাতে প্রয়োজন প্রায় ৩৫ লাখ টাকার। এপর্যন্ত সংগৃহীত হয়েছে তিন লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার টাকা।

আমি কাছের দূরের সবাইকে বলবো আপনারা একটু যাচাই করুন...বিশ্বাস করুন...ভালোবেসে এগিয়ে আসুন একজন সংগ্রামী মানুষ, ট্র্যাভেলার মনসুরকে বাঁচাতে। আমি বিশ্বাস করি শুধুমাত্র টাকার অভাবে আমরা আমাদের বন্ধুকে হারাবো না।

প্রতিদিনের নানা খরচ থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে এই ছেলেটার সাহায্যার্থে কি একটু এগিয়ে আসতে পারিনা?

জয় হোক মানবতার, বেঁচে উঠুক মনসুর! আর সবার মতো সেও যাতে একদিন সুস্থ হয়ে ঘোরাঘুরি করতে পারে...সেও যাতে একদিন এগিয়ে আসতে পারে অন্য কোন ট্র্যাভেলার ভাই বন্ধুকে বাঁচাতে।

মনসুরকে সাহায্য করতে...
মনসুরের সাহায্যার্থে ফেইসবুকে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে যেখানে বিস্তারিত আপডেট রয়েছে। ইভেন্ট লিংক:
https://www.facebook.com/events/996732373683642/

বিকাশ করতে পারেন
০১৯২৩১৫৮৪৪৯ (নাজমুল)
অথবা
একাউন্ট নং ১২২১৫১৮১০৯৬
ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড
উল্লেখ্য যে এটি জয়েন্ট একাউন্ট এবং একাউন্টটির প্রথম এপ্লিকেন্ট হল মোঃ নাজমুল হক
( টাকা জমা দেয়ার ক্ষেত্রে মোঃ নাজমুল হক এর নাম উল্লেখ করতে হবে )

এছাড়া অন্য যে কোনো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন- 
সবুজ ০১৭১৬৭৯৫৯৪১, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
অনিক ০১৬১২৩০৭০৯০, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দিয়া ০১৯১৭৫১৮১২৮, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

লেখক: ফরিদ ফারাবী
লেখক/পর্যটক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।