আমাদের উচ্চতা অনুপাতে থেকে কোমরের মাপ দিয়েই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকির ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়, সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
অক্সফোর্ড ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্গারেট অ্যাশউইল বলেন, আমাদের শরীরের উচ্চতার তুলনায় কোমরের মাপ অর্ধেকের কম হলে স্থূলতা সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
উচ্চতা থেকে কোমরের পরিধি(বেষ্টন) অর্ধেকের কম রাখতে পারলে আমাদের আয়ু বৃদ্ধিতেও সাহায্য করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন অ্যাশউইল।
এটি অত্যন্ত সহজ একটি পদ্ধতি হওয়ায়, বিশ্বের সব চিকিৎসক এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব দ্রুত উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের মতো রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে রোগীদের সচেতন করতে পারবেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে ৩১ টি গবেষণার থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নারী ও পুরুষের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের পূর্বাভাসের জন্য কোমরের মাপ থেকেই উল্লেখযোগ্য ভাবে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
আজই মেপে দেখুন। উচ্চতার তুলনায় কোমরের মাপ অর্ধেকের বেশি হলে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।
জেনে নিন খুব সহজে ওজন কমিয়ে কোমরের মাপ শরীরের উচ্চতার অর্ধেকের মধ্যে নিয়ে আসার কৌশল:
• প্রথমেই সকালে উঠেই পানি পান করুন
• সকালে নাস্তা করুন। সকালের স্বাস্থ্যকর নাস্তা আপনার ক্ষুধা কমিয়ে আনে।
• খাদ্য তালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। প্রোটিন হজম হতে অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় বেশি সময় নেয়। ফলে পাকস্থলী খাদ্যশূন্য হতে বেশি সময় নেয়। একইসঙ্গে আদর্শ ওজন ধরে রাখতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
• ফল খান। পানি এবং ফলের আঁশ আমাদের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে। ফল শরীর থেকে ক্ষতিকর চিনি অপসারণ এবং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে জুস করে নয়, আস্ত ফল খেতে হবে
• খাবার তালিকায় মৌসুমী সবজি রাখুন। সবজির আঁশও খাবার হজম এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে চার ধরনের সবজি খাওয়া উচিৎ। সে ক্ষেত্রে সবজির সালাদ খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
• ওজন কমানোর ক্ষেত্রে স্যুপ এবং সালাদ খাওয়া খুবই নিরাপদ। তবে অবশ্যই ক্রিম এড়িয়ে চলতে হবে
• খাবার তালিকায় বাদাম যোগ করুন। বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা পেশী গঠনে সাহায্য করে
• চিনি জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের পানীয় অপ্রয়োজনীয়ভাবে শরীরে ক্যালরি যোগ করে এবং যেটা চর্বিতে পরিণত হয়ে স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে গ্রিন টি, নারকেলের পানি ও মিষ্টি নয় এমন কোনো পানীয় পান করতে পারেন
• দ্রুত ওজন কমাতে (ফ্যাড ডায়েট) যাবেন না। এ ধরনের খাবারে আপনার শরীরও হঠাৎ দুর্বল হয়ে যাবে
• নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীর মন সুস্থ রাখে, নিয়মিত কম হলেও ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
পরিমিত খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে জটিল সব রোগের ঝুঁকি কমিয়ে সুস্থ থাকুন।