দেশি এতিহ্য আর সমৃদ্ধির যে চিত্র আমাদের মনের মধ্যে রয়েছে। তার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মসলিন, জামদানী আর তাঁত পোশাক।
সময়ের সাথে সাথে তাঁতের শাড়ির জনপ্রিয়তা আবার তৈরি হচ্ছে। আমরা অনেকেই জানি না, ঢাকার খুব কাছে মানিকগঞ্জের তাঁতের শাড়ির জন্য বেশ খ্যাতি রয়েছে।
অর্থ সংকট আর কাজের অভাবে এক সময়ে প্রায় বন্ধ হতে বসে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বেশ কয়েকটি তাঁত শিল্প। তবে আশার কথা হচ্ছে, আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ওই উপজেলার বরাইদ এলাকার সাভার বাজার এলাকার এতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পগুলো।
তাঁত শিল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলাপ হয় ওই এলাকার বেশ কয়েকজন তাঁত মালিক ও শ্রমিকের সঙ্গে। নতুন উদ্যোমে কাজ করে নতুন সোনালী দিনের স্বপ্ন বুনছেন তারা।
এলাকার শাহানুর রহমান (৪৮) বাংলানিউজকে জানান, এক সময় খুব গর্ব আর দাপটের সাথেই তাঁতের ব্যবসা করতেন তিনি। অর্ধশত তাঁতী কাজ করতেন তার তাঁতে। ব্যবসা ও খুব ভালো ছিলো। এরপর দীর্ঘদিন তাঁত ব্যবসা বন্ধ থাকার পর আবার কাজ চলছে পুরোদমে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার এক অভিজাত দোকানের অর্ডারের শাড়ি ও পাঞ্জাবির গজ কাপড় তৈরি নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময়ই কাটাচ্ছেন তিনি।
আরেক ব্যবসায়ী জুলহাস উদ্দিন (৩৫) বলেন, কাজের অর্ডার না পাওয়ায় তাদের ওই তাঁত শিল্পগুলো মৃতপ্রায় ছিলো, কিন্তু উপযুক্ত পারিশ্রমিকে কাজের অর্ডার পেয়ে ব্যবসা আবার ধীরে ধীরে ঘুরে দাড়াচ্ছে।
দোকান মালিকরা তাদের অর্ডার দেন তারা এখান থেকে শুধুমাত্র শাড়ি বা গজ কাপড় তৈরি শেষে নিয়ে গিয়ে আবার এগুলোতে হাতের কাজ করান। পরে তাদের মতো করেই নাম ও দামের লেভেল ব্যবহার করেন তারা।
গ্রামের তাঁতে কাজ করা সাধারণ শ্রমিকরা বলেন, তাঁতগুলো নতুন করে চালু হওয়ায় এলাকায় বেশকিছু মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছে।
টাঙ্গাইলের পাতরাইল থেকে সুতা কিনে নিজেদের এলাকার শ্রমিক দিয়েই তারা তৈরি করেন শাড়ি, লুঙ্গি ও গজ কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের কাপড়। এজন্য তাদের একেক রকমের অর্ডারের কাপড় তৈরিতে একেক রকমের খরচ হয়।
বর্তমানে তারা পহেলা বৈশাখের যে শাড়িগুলোর অর্ডার পেয়েছেন এতে করে প্রতিটি শাড়িতে সবমিলে তাদের ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা খরচ হচ্ছে।
এলাকার প্রায় ১৫ জন তাঁত মালিক বিভিন্ন দোকান থেকে পাঞ্জাবি ও শাড়ির অর্ডারের কাজ করছেন।
বছর জুড়েই এমন কাজের নিশ্চয়তা আশা করেন, তাঁতশিল্পীরা।