ঢাকা, বুধবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ মে ২০২৪, ২০ জিলকদ ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

ঘরও সাজবে বৈশাখী রং-এ

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
ঘরও সাজবে বৈশাখী রং-এ

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে সবাই নিজ ঘরে ফেরে একটু শান্তির জন্য। প্রশান্তির এ জায়গাটুকু নিয়ে মানুষের ভাবনা-চিন্তার যেন অন্ত নেই।

নিজের ঘরটিকে সবাই সাজাতে চায় মনের মতো করেই।

তবে দীর্ঘদিন থেকে একই সাজের ঘর, একই রঙের ফার্নিচার, পর্দা দেখে আসতে আসতে হয়তো বা নিজের মনের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসতেই পারে, নিজের অজান্তেই মন চায় একটু পরিবর্তন, একটু ভিন্ন আমেজ।

আমাদের পুরনো ঘর-বাড়িকে একটু বদলে নিয়ে কীভাবে ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন আমেজে নতুনের মতো করে সাজিয়ে তোলা যায় এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন রেডিয়েন্ট ইন্সটিটিউট অব ডিজাইনের চেয়ারপারসন গুলশান নাসরীন চৌধুরী

সামনেই পহেলা বৈশাখ আমরা চাইলে ঘরও সাজাতে পারি বৈশাখী রং-এ। নতুনের আহ্বান সবসময় মানুষের মনকে দোলা দেয়। আর নতুন ঘর-বাড়ির প্রতি আমাদের আগ্রহটাও কম নয়। এতে যেমন নতুন একটা পরিবেশ পাওয়া যায় তেমনি নুতন উদ্যমে কাজ করার স্পৃহা জাগে, আর আমাদের মন ও মনন সিক্ত হয় অন্যরকম ভালোলাগায়। ঘনবসতির এ নগরীতে বাসা পরিবর্তন বেশ ঝামেলার কাজ, তবে আমরা ইন্টেরিয়রে কিছুটা পরিবর্তন এনে নতুন একটা লুক আনতে পারি।
 
আমাদের পুরনো বাড়িটিকে কীভাবে সাজালে নতুন একটা লুক আসবে এ বিষয়ে গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, মানুষের মনের প্রশান্তির জন্য ঘরের ভেতরকার পরিবেশটা বেশ জরুরি। তাই একই ধাঁচের পুরনো ঘরবাড়ি একটু বদলে নিয়ে নতুন করে সাজিয়ে নেয়া প্রয়োজন। সবসময় বাসা বদলানো বা বাসার ফার্নিচার বদলে নতুন পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়।

তবে আমরা চাইলেই ঘরের পুরনো পর্দা বা বিছানার চাদরে ব্লক করে নতুনত্ব আনতে পারি। এতে যেমন ঘরের সৌন্দর্য বেড়ে যাবে তেমনি খরচটাও কম হবে। তিনি বলেন, বর্তমান শহুরে জীবনে বাসা পরিবর্তন বেশ কষ্টসাধ্য, তবে আমাদের ঘরগুলোর একটা দেয়াল রং করে পুরনো ম্যারমেরে পরিবেশটা বদলাতে পারি, এতে সময়ও লাগবে কম।

বেডরুমের দেয়ালগুলো হালকা নীল বা পছন্দের কোন রঙে রাঙাতে পারি। ডাইনিং স্পেসটা ছোট হলে দেয়ালের একটা পার্ট লাল বা অন্য কোন ডার্ক রঙের ব্যবহার করতে পারি। শিশুদেরও মাঝে মাঝে পরিবর্তন দরকার তাই ছেলেশিশু হলে তার ঘরটি নীল, সবুজ রঙে আর মেয়েশিশু হলে গোলাপী রঙে সাজাতে পারি। দেয়ালের রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে ঘরের লাইটিংয়েও পরিবর্তন আনা যেতে পারে।

বসার ঘরের সৌন্দর্য হল সোফার কভার, কুশন। এক্ষেত্রে কুশনের কভারটা একটু বদলে নিয়ে বা ব্লকের কাজ করে নতুনত্ব আনা যেতে পারে। ঘরের পর্দাগুলো যদি প্রিন্টের হয় তাহলে লেইস বা নেট লাগিয়ে পর্দায় নতুন লুক আনা যেতে পারে। আবার পুরনো শাড়ি পর্দার ফ্রেমে দিয়ে নতুনত্ব আনা যেতে পারে।

পর্দায় পুরনো কাতান শাড়ির পাড় ব্যবহারের কথাও বলেন তিনি । ঘরের ভেতরকার পরিবেশ পরিবর্তন নিয়ে নাসরীন চৌধুরী বলেন, ঘরে নতুন আমেজ পেতে ঘরের সোফা, বেড বা অন্যান্য ফার্নিচারের সেটিংয়েরও পরিবর্তন করা যেতে পারে। ঘরের পরিবেশে সজীবতা আনতে গাছের ব্যবহারের কথাও উল্লে¬খযোগ্য। এক টুকরো সবুজ যে প্রশান্তি দিতে পারে তা অন্য কোনও কিছুর দ্বারা সম্ভব নয়। তাই আমরা আমাদের ঘরটিকে সজীবতা আর প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ করতে বিভিন্ন রকম গাছের ব্যবহার করতে পারি।

তাই চাইব আমাদের ঘরটি সাজুক আমাদেরই হাজার বছরের লালন করা দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়ায়। ঘরের ইন্টেরিয়রে সবচেয়ে মুখ্য বিষয় হল ঘরের পর্দা। যেমন গ্রীষ্মকালে আমরা লাইট কালার ব্যবহার করতে পারি, শীতকালে ডার্ক রং-মেরুন, ব্যবহার করতে পারি। বাড়ি যদি বড় হয়ে থাকে তাহলে ফার্নিচার পরিবর্তন করতে পারি। বছরে অন্তত একবার ঘরবাড়ি রং করা প্রয়োজন। বাসায় বিভিন্ন রকম টবে ফুলের গাছ বা শৌখিন গাছের ব্যবহার পরিবেশ-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

ঘরের বেডকভার, কুশন পরিবর্তন করেও নতুন লুক আনা যেতে পারে। অথবা ঘর সাজাতে পারি নানারকম পোর্টারি দিয়ে। ঘরে ভিন্ন স্বাদের সুরের মূর্ছনা তৈরি করতে দরজায় লাগাতে পারি ডোরবেল।

ঘরের ইন্টেরিয়রে প্রয়োজনীয় এসব বিষয় নিয়ে বর্তমানে আমাদের দেশের বেশকিছু ফ্যাশন হাউস কাজ করছে। এর মধ্যে আড়ং, দেশাল, বিবিয়ানা, রং, অঞ্জন’স, কে-ক্রাফট, যাত্রা অন্যতম। ঘর সাজানোর নানা রকম নিত্যনতুন ডিজাইনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। বিবিয়ানায় ম্যাচিং বেডকভার, পর্দা ও কুশনকভার ব¬কের কাজ করাগুলো পাওয়া যাবে ৫০০-১২০০ আর অ্যাপ্লি¬কেরগুলো পাওয়া যাবে ১০০০-২০০০ টাকায়। ব্লক প্রিন্টের পর্দার দাম পড়বে ৪০০-৬০০, কুশনকভারের দাম ১৫০-৪০০ টাকা। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসের পর্দা, কুশন ও বেডকভারের দাম কাছাকাছি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।