ঘুম বা নিদ্রা নিয়ে আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনেছি কতশত কবিতা গান। ছোটবেলা মা ঘুম পাড়ানি মাসি পিসি বলে ঘুম পাড়াতেন।
একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমালে আমরা অনিদ্রা আবার ৯ ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমালে বেশি নিদ্রা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। ৭-৮ ঘণ্টা নিয়মিত ঘুমই হলো পরিমিত ঘুম।
একটি পরিমিত আদর্শ ঘুমের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় জড়িত থাকে। যেমন আপনার মস্তিষ্কের রসায়ন, আপনার প্রতিদিনকার কাজকর্ম, শারীরিক অবস্থা আর বিশেষ করে শোবার ঘরের পরিবেশ।
এছাড়া আরো একটি বিষয়কে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সামনে এনেছেন সেটি হলো খাদ্য তালিকা। যেটি আপনার ঘুমের ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
অতিরিক্ত মাত্রার চর্বি জাতিয় খাবার কিংবা প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার আপনার ঘুমকে নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। তবে আজ আমরা কিছু খাবারের নাম বলব যেগুলো আপনাকে সুখনিদ্রা দিতে সাহায্য করবে। চিন্তা করুন কোন ধরনের ঘুমের ওষুধ না খেয়ে শুধুমাত্র কয়েকটি বিশেষ খাবার গ্রহণে আপনি সুখনিদ্রা যাচ্ছেন।
তিনটি বিশেষ রাসায়নিক সেরোটনিন, মেলাটোনিন ও ট্রিপটোফেন ঘুমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। গবেষকরা বলেছেন এই উপাদানগুলো শরীরে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হলেও এসব উপাদান একাকী ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক নয়। বরং এদের সাথে ভিটামিন সি, ই এবং ফাইটকেমিক্যাল রেসভারট্রল মিশ্রিত হয়ে একটি আদর্শ ঘুম তৈরিতে সহায়তা করে।
আসুন জানি এমন কিছু খাবারের নাম ও প্রস্তুত প্রনালী:
পিনাট বাটার সাথে লো ফ্যাট দুধ
বাদামের বাটারের সাথে এক টুকরা চিনি ছাড়া টোস্ট বিস্কুট খান, সাথে পান করুন একগ্লাস লো ফ্যাট দুধ। দুধ আর বাটারে আছে ট্রিপটোফেন আর টোস্টে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই।
কাজু বাদামের সাথে কিউই ফল
একটি ছোট কিউই ফল ও সাথে ২ চামচ বাটা কাজু বাদাম মিশিয়ে খান, ভালো ঘুম হবে। কিউইতে আছে সেরোটনিন ও ভিটামিন সি আর কাজুবাদামে আছে ট্রিপটোফেন।
আঙুর,কলা ও কাঠবাদাম
ছোট একটা বাটিতে ৩/৪ টুকরা পাকা কলা, ৬/৭ টা আঙুর কুচি করে কাটা আর সাথে দুই চামচ বাটা কাঠ বাদাম মিশিয়ে খান। কলা আঙুর আপনাকে দেবে মেলাটনিন, এন্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন, আর কাঠবাদাম দেবে ট্রিপটোফেন ও ভিটামিন ই। এছাড়াও আঙুরে আছে ফাইটকেমিক্যাল রেসভারট্রল।
নিয়মিত এসব খেলে ঘুমের জন্য বাড়তি চিন্তা করে ঘুম নষ্ট হবে না।
লেখক: ডা. শরীফ মহিউদ্দিন
এমবিবিএস,এফ আর এস এইচ (লন্ডন)
ফেলো অব ডায়াবেটিস (ইন্ডিয়া)
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মাস্কট মেডিকেল সেন্টার, বনানী ,ঢাকা।