আলিয়া-ক্যাটরিনার মতো সুন্দর, আকর্ষণীয় শরীর-সৌষ্ঠব গঠনে যারা ভূমিকা রেখেছেন, তাদের একজন সেলিব্রেটি ফিটনেস স্পেশালিস্ট মুম্বাইয়ের ইয়াসমিন করাচিওয়ালা।
মুম্বাইসহ গোটা ভারতে বডি ইমেজ ও পিলাটেস স্টুডিওর ধারণা প্রবর্তনকারী এ নারী নিয়মিত ট্রেনিং করান-করিয়েছেন ক্যাটরিনা, আলিয়া ছাড়াও কারিনা কাপুর, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ, দীপিকা পাড়ুকোন, ইলিয়ানা ডি ক্রুজ, প্রীতি জিনতা, মালাইকা আরোরা, বিপাশা বসু, জারিন খান প্রমুখের।
বলিউড কাঁপানো এসব হার্টথ্রব নায়িকাদের মতো ফিগার বানানোর সুযোগ এবার বাংলাদেশেও। ফিটনেসের ধারণা বদলে দিতে সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখে ঢাকার বনানীতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম পিলাটেস স্টুডিও। ঢাকায় ‘ইয়াসমিন’স বডি ইমেজ ফর ফিটনেস স্টুডিও’ র ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে আসছেন নুদরাত এস করিম।
প্রায় দুই যুগের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ইয়াসমিনের কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই আসছেন ঢাকায়। তারা কাজ করবেন ঢাকার স্টুডিওতে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন ইয়াসমিন নিজেই। তিনি ভারতের প্রথম বিএএসআই সার্টিফায়েড পিলাটেস প্রশিক্ষক। মুম্বাইয়ে তার নিজস্ব ফিটনেস স্টুডিও রয়েছে। মিস ইন্ডিয়া, গেট গর্জিয়াসসহ আরও অনেক সৌন্দর্য ও ফিটনেস প্রতিযোগিতায় ট্রেনিং দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ঝুলিতে।
বনানী ২৩ নম্বর রোডের বি ব্লকের ৫০ নম্বর ট্রি হাউসের ৬ষ্ঠ তলায় তিন হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে এ স্টুডিওটি শুধু নারীদের জন্য। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় থাকছে অগ্রাধিকার। বাইরে সার্বক্ষণিক থাকবেন গানম্যান। পিলাটেস ছাড়াও কার্ডিয়াক ইয়োগা থাকবে এ ফিটনেস স্টুডিওর অন্যতম আকর্ষণ। আর পিলাটেসের মধ্যে থাকছে টিআরএক্স, ফাংশনাল ট্রেনিং ও জিম সুবিধা।
ঢাকার ‘ইয়াসমিন’স বডি ইমেজ ফর ফিটনেস স্টুডিও’র ম্যানেজার ফেরদৌসী শরাফত নিজাদ বাংলানিউজকে বলেন, স্টুডিও ডেকোরেশনের কাজ প্রায় শেষ। দেশের বাইরে থেকে অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের সব ফিটনেস যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। মানের ক্ষেত্রে কোম্পানি আপস করবে না।
ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে তিনি বলেন, এখানে কোনো ভারী ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হবে না। থাকবে হালকা ইন্সট্রুমেন্ট। একজন ব্যক্তি একজন প্রশিক্ষকের কাছেই প্রশিক্ষণ নেবেন। প্রতিমাসে থাকবে গ্রুপ ও পারসোনাল ক্লাস। কোনো টাইমফ্রেম থাকবে না। একজন ব্যক্তির শারীরিক গঠন বলে দেবে তাদের কতদিন ট্রেনিং নিতে হবে।
নিজাদ আরও বলেন, আমাদের জিমে প্রশিক্ষকরা নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আপনার জন্য উপযুক্ত ফিটনেস প্ল্যান করে দেবেন। এটি শরীরচর্চা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে নিশ্চিত করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক পিলাটেস কী?
পিলাটেস এক ধরনের শরীরচর্চা পদ্ধতি যা বিংশ শতাব্দীর শুরুতে জোফেস পিলাটেস উদ্ভাবন করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে পিলাটেস শুরু করেছিলেন জো। পিলাটেস নাটকীয়ভাবে শারীরিক সৌন্দর্য, অনুভূতি ও কাজকর্মের উন্নতি করতে সক্ষম। এটা শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না, দেহের শক্তি বাড়ায়, হাঁটু চিকন ও তলপেট সমান রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মতান্ত্রিক শ্বাস-প্রশ্বাস, দেহের স্পাইনাল ও পেলভিক সিস্টেমের সঠিক বিন্যাস এবং ধীরস্থির চলাচলের মাধ্যমে পিলাটেস দেহের সঙ্গে মস্তিষ্কের সম্পর্ক স্থাপন করে।
শরীরচর্চায় পিলাটেস পদ্ধতি ব্যবহার করলে দেহের কেন্দ্রের গঠন শক্তিশালী হয়। পরিপাক পেশি ও মেরুদণ্ডের নিকটবর্তী পেশি দিয়ে দেহের কেন্দ্র গঠিত। পিলাটেসের মাধ্যমে দেহের একাধিক পেশি একই সময়ে চলাচল করে। এর সঠিক পদ্ধতি আয়ত্তে আনার মাধ্যমে শরীরের নিরাপদ চলাফেরা ও দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।
পিলাটেসের উপকারিতা
১। ব্যায়ামে স্পষ্টতা তৈরি ও নির্ভুল শরীরচর্চা
২। দ্রুত দেহের শক্তিধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি
৩। আহত অবস্থায় দ্রুত আরোগ্য লাভ
৪। সব বয়সের সব শ্রেণীর মানুষের জন্য উপযোগী
৫। মস্তিষ্ক ও দেহের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি
৬। সব বয়সের মানুষের দেহ বৈশিষ্ট্যে ভারসাম্য তৈরি
৭। ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের দ্রুত উন্নতি
৮। সুষ্ঠু শ্বাস-প্রশ্বাস
৯। উন্নত চলাচল
১০। অঙ্গস্থিতিহীনতা দূর করা
১১। দেহ সচেতনতা বৃদ্ধি
১২। দেহ সমন্বয় সাধন
১৩। স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ
১৪। মনোযোগ বৃদ্ধি
সুতরাং, শরীর-স্বাস্থ্য সচেতনরা রেডি হয়ে যেতে পারেন এবার!
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৭
এএ