বাবাকে নিয়ে যদি লেখা শুরু করি, তাহলে কোথা থেকে যে শুরু করে কোথায় গিয়ে শেষ করবো তা বুঝে ওঠাই মুশকিল। পৃথিবীতে মানুষের শ্রেষ্ঠ আপনজনদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি হলেন বাবা।
পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ মেলে প্রশস্ত বৃক্ষের মতো ছায়াদানকারী বাবার বুকে। শত আবদার আর নির্মল শান্তির এ গন্তব্যটি কারোরই অজানা নয়। দায়িত্বশীল হয়ে বেড়ে উঠতে বাবাকে দেখেই শিখি আমরা।
বাবাকে আপনি অকৃত্রিম আন্তরিক ভালোবাসা জানাতে উপহার দিতে পারেন। যদিও বাবারা উপহার পেতে নয় দিতেই ভালোবাসেন।
সব বাবাই শাসনে কঠোর, ভালোবাসায় কোমল, স্নেহে উদার, ত্যাগে অগ্রগামী। সন্তানের মাথার ওপর যার স্নেহচ্ছায়া বটবৃক্ষের মতো, সেই বাবার প্রতি বাবা দিবসে বিশ্বব্যাপী ঘটা করে জানানো হবে বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসা। সন্তান যতই বড় হোক না কেন বাবার কাছে সে সব সময়ই ছোট। সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে অসীম সংগ্রাম করে স্নেহপ্রবণ বাবা, শত কষ্টের মধ্যেও সন্তানের জন্য সাধ্যমতো নিজেকে বিলিয়ে দিয়েই যার আনন্দ তিনিই তো আমাদের বাবা।
আজ বাবা দিবসে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সন্তানরা নতুন করে বাবাকে ভালোবাসা জানাতে ব্যস্ত। ছোটবেলার বাবার সঙ্গে অনেক স্মৃতি আর ছবিতে ভরে উঠেছে সবার ওয়াল। এমনই এক সন্তান সাংবাদিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন লিখেছেন- বাবা, শৈশবে তোমার গালে কবে আমি চুমু খেয়েছিলাম – মনে নেই। আজ মাঝে মাঝে তোমাকে প্রণাম করলে তুমি যখন আমার কপালে আশীর্বাদ-চুমু দাও তখন লজ্জায় আমি তোমাকে চুমু দিতে পারি না! শৈশবে তখন তুমি যুবক ছিলে, আর আমি শিশু। আজ আমি যুবক আর তুমি বুড়ো হতে হতে অনেকটাই শিশু হয়ে গেছো। অনেক কথাই আজ ভুলে যাও। মাঝে মাঝে তোমার ওপর প্রচন্ড রাগ ওঠে; তোমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিবাদ করে তোমার মুখের ওপর অনেক কথাই বলে ফেলি।
রক্তবন্ধনের টকটকে লাল রংটাকে তুমি নিজে খাঁটি রাখতে চাও বলেই হয়তো আমার সেই কথার প্রতিবাদ করো না। নানা বিষয়ে কত্ত উৎকণ্ঠা আমার জন্য তোমার! বাবা, তোমাকে জড়িয়ে ধরতে বড় ইচ্ছে হয়। একবার ধরতে দেবে?
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আছিয়া নীলা বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, বাবা তোমার জন্যই আজকের এই আমি।
এমন দিনে শুধু এবার বাবার সঙ্গে ছবি না দিয়ে, সারা জীবন বাবা-মাকে ভালো রাখতে আমরা যা করতে পারি:
• বাইরে গেলে ঘরে ফিরে প্রথমে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করুন
• সুযোগ থাকলে তাদের পছন্দের কিছু নিয়ে আসুন
• বৃদ্ধ বয়সে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাদের প্রতি অবহেলা করা যাবে না
• নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন
• বাবা-মায়ের ওষুধ আছে কিনা দেখে এনে রাখুন
• অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে হলে চেষ্টা করুন নিজে নিয়ে যেতে
• বাবা মায়ের সঙ্গে শুধু বিশেষ দিবসে নয়, মাঝে-মাঝেই ছবি তুলুন
• সময় পেলে বাবা -মায়ের কাছে আপনার ছোটবেলার গল্প শুনতে চান, আপনার গল্পগুলো করার সময় ওনারা আপনার পুরো শৈশব চোখের সামনে এনে দেবেন
• কোনো কারণে যদি বাবা-মা আলাদা থাকেন, তবে নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখুন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
এসআইএস