নারী জাগরণের অগ্রদূত ও নারী-অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পৃথিকৃৎ বেগম রোকেয়া। বাস্তবে তো অনেক দূরের কথা, যখন বাঙালি নারীর স্বপ্ন বা চিন্তার স্বাধীনতাও ছিল না, তেমনি একটা সময়ে অবরোধ প্রথার বিরুদ্ধে ও নারী মুক্তির-নারী স্বাধীনতার দাবি তুলে ধরেন মহিয়সী এই নারী।
১৮৮০ সালের ০৯ ডিসেম্বর খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম গ্রহণ করেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে অবদান রাখায় পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে প্রতি বছর বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।
নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় এবছর বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার। তিনি একাধারে কথাসাহিত্যিক, কবি ও কলামিস্ট।
অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম ও প্রথম মহিলা উপাচার্য। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন।
সেশনজট ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছেন ড. শিরীন আখতার। নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করতেও ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি।
ড. শিরীন বাংলানিউজকে বলেন, যতদিন আছি আমার স্বপ্ন এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বোচ্চ মানে উন্নীত করা। নারীদের শিক্ষা অর্জনের জন্য সচেতনতা তৈরি করা।
অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারের জন্ম ১৯৫৬ সালে কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে। বাবার নাম আফসার কামাল চৌধুরী এবং মা বেগম লুৎফুনহরার কামাল। স্বামী লতিফুল আলম চৌধুরী। ছেলে এবং এক মেয়ের জননী।
১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন ড. শিরীন। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
২০০৬ সালে নজরুলের জন্মজয়ন্তীর কমিটি তাকে নজরুল পদককে ভূষিত করে। বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পদকপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা পদক, সনদ ও চেক তুলে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পদক দেওয়া অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নারী শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতারের সঙ্গে পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) নাজমা বেগম, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মঞ্জুলিকা চাকমা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে মুশতারী শফি (বীর মুক্তিযোদ্ধা) ও নারী অধিকারে অবদানের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার এ বছর বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
এসআইএস