দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অণু আক্তার পরিবারের সঙ্গে বসে টেলিভিশনে দেখছিলেন শিশুতোষ অনুষ্ঠান সিসিমপুর। সিসিমপুরের বিভিন্ন চরিত্রের মাঝে তার চোখ পড়লো প্রমীলা ক্রিকেটার সালমা খাতুনের ওপর।
সে অবাক বিস্ময়ে চিন্তা করলো নারীদেরও জাতীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ রয়েছে! আপাতদৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য মনে না হলেও, এই ছোট ঘটনা থেকেই নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন গাজীপুরের মেয়ে অণু আক্তার।
অণুর শৈশব-কৈশোর কাটে গাজীপুরের কাশিমপুরে। এসএসসি পাশ করেছেন হাতিমারা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। বাবা টাইলসের ঠিকাদার আর মা গৃহিণী। নিজেদের বাড়িতেই পাঁচ বোন ও এক ভাইয়ের সঙ্গে তার বেড়ে ওঠা। ব্যবসায়ী ভাই আর গৃহিণী বোনদের মাঝে অণু আক্তারের স্বপ্নটাই কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলে খেলার স্বপ্ন আর নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছা নিয়ে তিনি শুরু করেন ফুড ডেলিভারির কাজ।
অণু জানান, খেলাধুলার পাশাপাশি আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে তিনি যোগ দিয়েছেন ফুডপ্যান্ডায়। এখন কাজ করছেন মিরপুর জোনে। পড়াশুনোর পাশাপাশি পাড়ার ছেলেদের ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট খেলতেন অণু।
ধানমন্ডি মহিলা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের প্রথম নারী কোচের হাত ধরে ক্রিকেট জগতে তার প্রবেশ। বর্তমানে অনুশীলন করছেন আবাহনীতে।
আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এই প্রমীলা ক্রিকেটার। ঋণ নিয়ে কিনেছেন নিজের বাইক। রাইডার হিসেবে কাজ করেছেন বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও।
খাবারের ডেলিভারির এই কাজে শুধু পুরুষদের নিয়োগ দেওয়া হয়। নারী হয়ে এই কাজ করা প্রথম দিকে সহজ ছিল না অণুর জন্য। তবে আর্থিক স্বাধীনতা তাকে এই সমাজে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ করে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
অণুর মতে, একজন নারীর এগিয়ে চলার জন্য সাহসটাই আসল। সাহস করে এগিয়ে গেলে নিন্দুকেরা পেছনেই পড়ে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২১
এসআইএস