ঢাকা: ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে জেগে ওঠা যাত্রাপুর ইউনিয়নে গড়ে ওঠেছে নতুন আরেক চর। সেই চরের মানুষ চরম দুর্ভাগা।
দারিদ্রতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেড়ে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ চরের মানুষের নিত্যসঙ্গী। বানবাসী হতভাগা এসব মানুষদের পাশে দাঁড়ায় জলবায়ু সুবিচার ও পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের একদল যুবক। স্থানীয়রা ভালোবেসে এলাকার নাম রাখেন ‘চর ইয়ুথনেট’।
চলতি বছরের বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার দুই শতাধিক চরবাসীর মাঝে ত্রাণ ও পুর্নবাসন সহায়তা দিয়েছে জলবায়ু সুবিচার ও পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস। ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে জেগে ওঠা যাত্রাপুর ইউনিয়নে গড়ে ওঠা নতুন চরটির গণমানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এর নাম ‘চর ইয়ুথনেট’ ঘোষণা দেয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের একটি চরে আশ্রয় নেওয়া ২শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়। ত্রাণসামগ্রী হিসেবে কম্বল, স্যানিটারি ল্যাট্টিন, টিউবওয়েল, ঢেউটিন, ভিটে মাটি উঁচুকরণে নগদ অর্থ, সেলাই মেশিন ও বিভিন্ন সবজি বীজের চারা দেওয়া হয়।
উপকারভোগী শাহিনা বেগম বলেন, মাইন্সের বাড়িত কাম (কাজ) করছিনুং। চরোত চলাচল করা খুবে কষ্ট হচিল। সেলাই মেশিন পায়া খুব উপকার হইল। মোড় দুইকন্যা বেটির লেকাপড়া চলবার (লেখাপড়ার খরচ) পাইম। '
বন্যা পরবর্তী সময়েও চরবাসী মানুষের পাশে ছিল ইয়ুথনেট। এসময় চরবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা এ চরের নামটি যুব সংগঠনের নামে ‘চর ইয়ুথনেট’ হিসেবে ঘোষণা দেন যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল গফুর।
তিনি বলেন, আমরা যারা চরাঞ্চলে বসবাস করি আমাদের প্রতিদিন সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয়। বন্যা, শীত, খরা সবসময় আমাদের প্রকৃতির সাথে লড়াই করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। নতুন এই জেগে ওঠা চরটি নতুন নাম পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথনেট এর ইভেন্ট ও প্রোগ্রাম সমন্বয়ক এস জেড অপু, নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট সমন্বয়ক জিমরান মোহাম্মদ সায়েক, গাইবান্ধা জেলা টিমের সমন্বয়ক রোভার মারুফ হাসান, যাত্রাপুরের ইউপি সদস্য রহিম উদ্দিন হায়দার রিপন, যুবনেতা আলহাজ্ব ওমর ফারুক প্রমুখ।
ইয়ুথনেট’র নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, সারা বাংলাদেশে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার নিয়ে কাজ করছি। আমরা এরই মধ্যে উপকূল, হাওড়, সমুদ্র ও পাহাড়ি অঞ্চলে কাজ করেছি, সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতির থেকে বেশি কষ্টে আছেন কুড়িগ্রামের চরবাসী মানুষ। আমরা জলবায়ুর সুবিচারের পাশাপাশি এ অঞ্চলের চরবাসী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি। সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে চরবাসী প্রান্তিক মানুষের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।
ইয়ুথনেট সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা টিমের সমন্বয়ক সুজন মোহন্ত বলেন, আমাদের কুড়িগ্রামে ৪২০টি চর-দ্বীপচর রয়েছে। পাশাপাশি নতুন আরেকটি চর আমাদের সংগঠনের নামে হলো। আমাদের এখানে আরও দায়বদ্ধতা রয়েছে আমরা আরও বেশি করে কাজ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
এসএইচডি/এএটি
