ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মৌচাকে বাজপাখির থাবা, আহত অর্ধশত মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
মৌচাকে বাজপাখির থাবা, আহত অর্ধশত মানুষ

মেহেরপুর: মৌমাছির কামড়ে এক কৃষক নিহত হওয়ার তিন দিনের মাথায় গাংনী উপজেলার দুটি পৃথক পল্লিতে ফের মৌমাছির আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় মৌমাছির কামড়ে অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছেন।

আহতরা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গাংনী উপজেলার বামন্দী-দেবীপুর সড়কে ও সন্ধ্যার দিকে একই উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের মিশনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বামন্দী দেবীপুর সড়কে প্রায় ৩৫ জন ও জুগিন্দা গ্রামে ৬ জন মানুষ ও একটি গরু আহত হয়।

জুগিন্দা গ্রামের আহতরা হলেন- শুকনাল মণ্ডলের ছেলে বিপুল (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১৪), হারুনের ছেলে সোহাগ (১৮), ফকুর ছেলে জুয়েল (২২), মধুসুদন (৬৫) ও জাগরণ (১৫)।

মধুসুদন বলেন, গাছে মৌমাছির চাকে হঠাৎ একটি বাজপাখি থাবা দিয়ে চলে যায়। এসময় মৌমাছির দল চাক থেকে বেরিয়ে এসে মাঠের লোকজনকে কামড়াতে থাকে। এসময় একটি গরুকেও আক্রমণ করে মৌমাছি। আক্রান্তরা সবাই স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে বামন্দী দেবীপুর সড়কের বামন্দী পুলিশ ক্যাম্পের আদূরে মাঠের মধ্যে একটি বাবলা গাছে মৌমাছির চাকে বাজপাখি থাবা দিয়ে ভেঙে দেয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দফায় দফায় প্রায় ৩৫ জন পথচারীকে কামড় দেয় মৌমাছি। এতে মৌমাছির হুলে আহত অধিকাংশই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

দেবিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ছুরমান ও আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বামন্দী বাজারে যাওয়ার সময় মৌমাছির আক্রমণের শিকার হই। আমাদের শরীরে প্রচুর হুল ফুটেছে।

একই গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, মৌমাছির কামড়ে আমার শরীরে জ্বর এসেছে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।

স্থানীয়রা জানান, বামন্দী-দেবিপুর সড়কের পাশে একটি বাবলা গাছে থাকা মৌচাকে বাজপাখি থাবা দিলে চাকের মৌমাছিরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সড়কে চলাচল করা পথচারীরা একের পর এক আক্রমণের শিকার হন। এতে আহত হন প্রায় ৩৫ জন। ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করা মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়।

করমদী গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার বলেন, বামন্দী থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ শত শত মৌমাছির আক্রমণের শিকার হই। একটি মৌমাছি আমার কানের ভেতরে ঢুকে যায়। কানের মধ্যে কামড়াতে থাকে। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক কানের ভেতর থেকে মৌমাছিটিকে বের করেন।

দেবিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান ও আশরাফুল বলেন, আমরা মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। পাকা রাস্তার ওপর উঠতেই ঝাঁকে ঝাঁক মৌমাছি আক্রমণ শুরু করে। আমরা এসময় জান বাঁচাতে দৌড়াতে শুরু করলে মৌমাছিরাও পিছু নেয় এবং কামড়াতে থাকে। মৌমাছির কামড়ে শরীরে জ্বর চলে এসেছে, পরে চিকিৎসা নিয়েছি।

পথচারী হাড়াভাঙা গ্রামের শাকিল আহমেদ বলেন, ‘ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। দেবীপুর গ্রামের শুরুতে মৌমাছির আক্রমণের শিকার হই। আমাকে প্রচুর মৌমাছি কামড় দিয়েছে। আমার সামনে অনেকেই কামড় খেয়ে রাস্তায় গড়াগড়িও করেছে।

মৌমাছির কামড়ে করমদী গ্রামের আজগর আলী, সাইফুল ইসলাম, শান্ত মিয়া, গরীবপুর গ্রামের রেজাউল করিম, সাবান আলী, দেবীপুর গ্রামের কৃষক মিরাজ আলী, রহমান মিয়া, খলিলুর রহমান, নাজাত আলী, ছাতিয়ান গ্রামের সাবের আলি, হুরমত শেখ, আবু নাছের, সহড়াতলা গ্রামের রহিম আলী, সমসের, শাওনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।