ঢাকা, সোমবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৫১, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলায় স্বামী সুব্রত হালদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এক সন্তানের জননী গৃহবধূ সুবর্ণা হালদার (২৪) আত্মহত্যা করেন বলে জানায় পুলিশ।

মৃত সুবর্ণা হালদার উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের শ্যামল মন্ডলের কন্যা। আর গ্রেপ্তার সুব্রত হালদার অশোকসেন গ্রামের মধুসুদন হালদারের ছেলে।  

আগৈলঝাড়া থানার এসআই মো. আলী হোসেন বলেন, যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সুবর্ণা বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে বাড়ির পাশে গাছের সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসআই আরও জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা শ্যামল মন্ডল বাদী হয়ে স্বামীসহ চার জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার অন্যতম আসামি গৃহবধূর স্বামী সুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি গৃহবধূর শাশুড়ি উষা রানী হালদার, ননদ জোৎস্না রানী হালদারসহ ননদের ছেলে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নিহতের বাবা শ্যামল মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, সুব্রত হালদারের সঙ্গে দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সুবর্ণার।  

পেশায় কাঠ মিস্ত্রি শ্যামল মন্ডল বিয়ের সময় মেয়েজামাই সুব্রত হালদারকে কিছুই দিতে পারেননি উল্লেখ করে জানান, সুবর্ণার পায়ে চর্মরোগ ছিলো। চিকিৎসা করানোর পরেও ভালো হয়নি। বিয়ের সময় সুব্রত হালদারের বোন জোৎস্না হালদার পায়ে চর্মরোগ দেখেই পছন্দ করে ঘরে তুলে নেয়। পরে ওই চর্মরোগ ভালো না হওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে যৌতুক দাবি করেন তারা এবং তার বাবার বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

শ্যামল মন্ডল আরও জানান, বাড়ি থেকে ভাই-বোন বিভিন্ন সময় খাবার নিয়ে গেলেও সেগুলো তাকে না খেতে দিয়ে ফেলে দেওয়া হতো। এমনকি পিত্রালয় থেকে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে কথাও বলতে দেওয়া হতো না।

তিনি জানান, এ ঘটনা নিয়ে একাধিবার শালিস-বৈঠক করে সমাধান করা হয়। এরইমধ্যে সুবর্ণা একটি কন্যা সন্তানের জম্ম দেয়। এর জেরে তার মেয়ের ওপর আবার নির্যাতন শুরু হয়।

এদিকে, যৌতুক দাবি ও কন্যা সন্তান হওয়ায় নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে নিহতের স্বামী সুব্রত হালদার সাংবাদিকদের বলেন, স্ত্রী সুবর্ণা অতিরিক্ত কথা বলায় মাঝেমধ্যে মারধর করা হয়।  

বিয়ের সময় সুবর্ণার চর্মরোগের কথা গোপন রেখে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, ডি‌সেম্বর ২৯, ২০২২
এমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।