হবিগঞ্জ: লাখাই উপজেলায় রবিশস্য সরিষার সঙ্গে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে মৌমাছি পালন। এতে একদিকে ফলন, তার সঙ্গে বাড়তি লাভ মধু।
উপজেলাটির মুড়িয়াউক, সাতাউক, মোড়াকরি, গুণিপুর, সিংহগ্রাম, বামৈ, করাব, মৌবাড়ি মাঠ এখন হলুদের রাজ্য। মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষা গাছ।
সাতাউক মাঠে সরিষা ক্ষেতে ২৯টি মৌ-বাক্স স্থাপন করেছেন ছুরত আলী। এতে ভালো লাভ হওয়ায় সরিষা ও মৌচাষে আগ্রহ বেড়েছে।
ছুরত আলীর ২৯টি মৌ-বাক্স থেকে এ মৌসুমে প্রথমবার মধু আহরণ করা হয়েছে। প্রথম দফায় সেখান থেকে ৬০ লিটার মধু সংগ্রহ হয়। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার মধু সংগ্রহ করবেন। চলতি মৌসুমে তিনি আরও ১০ দফায় মধু সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
বাজারে প্রতি কেজি মধু ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ মৌসুমে তিনি অন্তত ৬০০ লিটার মধু পাবেন। মৌ-বাক্সগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেখানে তিনজন লোক কাজ করছেন নিয়মিত। একবার বাক্স বানানোর পর এতে আর তেমন খরচ নেই।
মধু আহরণের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, ক্ষেতের পাশে প্রথমে চাকের বাক্সে একটি রাণী মৌমাছি রাখা হয়। রাণী মৌমাছিকে দেখে সেখানে মৌমাছিরা আসতে থাকে। বাক্সের নিচে রাখা ছিদ্র দিয়ে মৌমাছি আসা-যাওয়া করে। ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহের পর মৌমাছিরা চাকেরর বাক্সে আসে। মৌমাছির তাপ ও বাতাসের মাধ্যমে ৬-৭ দিন পর তা গাঢ় হয়ে মধুতে পরিণত হয়।
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার লাখাই উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে ২ থেকে আড়াই টন সরিষা পাওয়া যায়। আবাদের ৭০-৮০ দিনের মধ্যে ফলন আসে। বাজারে প্রতি কেজি সরিষার দাম ৬০ থেকে ৭৫ টাকা। ৩ কেজি সরিষা থেকে ১ কেজি তেল ও ১ কেজি গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খৈল পাওয়া যায়। এখন নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে মৌচাষ। এই চাষ বাড়িয়ে দিতে পারলে চাষীরা অনেক বেশি লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বাংলানিউজকে জানান, মৌমাছি সরিষার পরাগায়নে সহযোগিতা করে। এতে ফলন বাড়ে। তবে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ মধুচাষের প্রতিবন্ধকতা। এক্ষেত্রে চাষীদের সচেতন করা হচ্ছে। এবার একটি মাঠে মৌ-বাক্স স্থাপন করা হচ্ছে। আগামীতে সকল হাওরে তা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসএএইচ