ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১০ স্প্যানে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান 

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
১০ স্প্যানে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান 

সিরাজগঞ্জ: দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ। এরই মধ্যে প্রকল্পটির ৫৩ শতাংশেরও বেশি অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বসেছে ১০টি স্প্যান, দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর এক কিলোমিটারেরও বেশি অংশ।  

রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সাব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার মো. রবিউল আলম বলেন, সেতুর ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ১১তম স্প্যান বসানোর কাজ চলছে। স্প্যানগুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য গড়ে ১শ’ মিটার করে। সেই হিসেবে সেতুর এক কিলোমিটারের বেশি দৃশ্যমান হয়েছে।  

প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে ৫০টি পিয়ার এবং দু’টি পিয়ারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য গড়ে ১শ' মিটার। এরই মধ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর প্রান্ত থেকে ৩৪ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর মোট ১৭টি পিয়ার স্থাপন করা হয়েছে। বাকি ৩৩টি পিয়ারের মধ্যে বেশ কয়েকটি আংশিক স্থাপন করা হয়েছে।  ৪০ নম্বর থেকে ৫০ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৩৯-৪০ নম্বর পিয়ারে আরও একটি স্প্যান বসানোর কাজ চলছে। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সেতুর ভূঞাপুর প্রান্তে সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ৫ মাসের মধ্যে ১০টি স্প্যান বসানো হলো।  

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হবে। এ সেতুতে কোনো স্লিপার থাকবে না। সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।  

জানা যায়, যমুনা নদীর বুকে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল প্রান্তে সহস্রাধিক দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের তত্ত্বাবধানে চলছে সেতুর এ কাজ। তিনটি প্যাকেজে আন্তর্জাতিক ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে জাপানের ওবাইসি-আইএইচআই ও এসএমসিসি নামে তিনটি জয়েন্ট ভেনচার কোম্পানি। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের কাজ করছে জাপানের আইএইচআই ওএসএমসিসি কোম্পানি এবং ডাব্লিউডি-৩ প্যাকেজের কাজও করছে দু’টি জাপানের দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, দ্রুত গতিতেই এগিয়ে চলেছে প্রকল্পের কাজ। ৫৩ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়েই এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে।  

এর আগে ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। এরপর থেকেই দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে সেতুর কাজ।  

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা একটি রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।