ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অনুমতি দেয়নি ভারত, ফিরে গেল সেই রুশ জাহাজ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
অনুমতি দেয়নি ভারত, ফিরে গেল সেই রুশ জাহাজ

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার জাহাজটি ভারতে পণ্য খালাস না করেই ফিরে গেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ অপেক্ষার পরও অনুমতি না পেয়ে জাহাজটি গত ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায়।

সূত্র জানায়, রাশিয়ার পতাকাবাহী উরসা মেজর নামের এই জাহাজটি বাংলাদেশের বন্দরে ঢুকতে না পেরে
কলকাতার হলদিয়া বন্দরে ভিড়তে চেয়েছিল। সেখান থেকে সড়ক পথে জাহাজটির পণ্য বাংলাদেশে আনার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।

আরও জানা গেছে, বাংলাদেশ, রাশিয়া ও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রুশ জাহাজটি কলকাতার হলদিয়া বন্দরে ভেড়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সাম্প্রতিক ভারত ও বাংলাদেশ সফরকালে জাহাজের প্রসঙ্গটি আলোচনায় তোলা হয়। তখন এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ঢাকা ও দিল্লির কাছে তুলে ধরেন ডোনাল্ড লু। সে কারণে ভারতে আর পণ্য খালাস করতে পারেনি জাহাজটি।

ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে রাশিয়া থেকে বেশ কয়েকটি জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়েছে। তবে সেসব জাহাজের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। এবার উরসা মেজর নামে যে জাহাজটি বাংলাদেশের ভিড়তে চেয়েছিল, সেই জাহাজটির প্রকৃত নাম স্পার্টা-৩। আর এই স্পার্টা-৩ জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়া এই জাহাজটি নাম বদলে রেখেছে উরসা মেজর। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার মুখে রুশ জাহাজটি বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি। উরসা মেজর নামে জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নিয়ে গত ১৪ নভেম্বর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বন্দর ছেড়ে আসে। গত ২৪ ডিসেম্বর জাহাজটির বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা ছিল।

তবে ওই জাহাজ বাংলাদেশে আসার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ঢাকাকে জানায়, উরসা মেজর নামে জাহাজটি আসলে স্পার্টা-৩ নামে রাশিয়ার মালিকানাধীন একটি জাহাজ। এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। এই জাহাজটিকেই নাম বদলে নতুন নাম উরসা মেজর হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া আছে। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে দিলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল জাহাজটিকে ভিড়তে দেওয়ার। বিষয়টি বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত গড়ায়। গত ২২ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশ কোনো নিষিদ্ধ জাহাজ ভিড়তে দেবে না। সেদিন ঢাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এ কথা জানিয়ে দেয় সরকার।

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দার মান্তিৎস্কি জাহাজটি বাংলাদেশে ভেড়ার জন্য অনুরোধও করেছিলেন। গত ২২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে তিনি এই অনুরোধ জানান। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে জাহাজটি ভারতের দিকে যাত্রা শুরু করে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
টিআর/এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।