ঢাকা: পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মোটরসাইকেল চালকেরা।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ফেসবুক গ্রুপ- পদ্মাসেতুতে বাইক চলার দাবি জানাই’ ব্যানারে তারা এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বপ্নের পদ্মাসেতু হওয়ার আগে দক্ষিণ বঙ্গের আপামর জনসাধারণ স্বপ্ন দেখেছিল মোটরসাইকেল চালিয়ে তারা কর্মস্থলে যাবেন। কাজ শেষে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু পদ্মাসেতু উদ্বোধনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই স্বপ্ন পূরণের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
তারা অভিযোগ করে বলেন, চক্রান্তকারীরা সরকারকে ভুল বুঝিয়ে পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করেছেন। সরকার মোটরসাইকেল চালকদের ভ্যাট, ট্যাক্স নিয়ে লাইসেন্স দিচ্ছে। এটি বাস-ট্রাকের মতোই দ্রুত গতির যান। ২১ জেলার প্রায় তিন কোটি মোটরসাইকেল চালকের রাজধানীতে আসার পথ বন্ধ রাখা মোটরসাইকেল লাইসেন্সের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।
তারা আরও বলেন, দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনে চালকদের সচেতন করার পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা লেন, গতি নির্ধারণ, ওজন, লাইসেন্স ইত্যাদির বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা যেতে পারে। তা না করে দীর্ঘদিন ধরে পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাকেরাও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও ফেরিতে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছেন।
তাই মোটরসাইকেল লাইসেন্সের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানান চালকেরা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মোটরসাইকেল চালকদের পক্ষে এ বিষয়ে আদালতে রিটকারী ও বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির সভাপতি কে এম আবু হানিফ হৃদয়, মহাসচিব এফ এম মিলন, অ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকার, অ্যাড. আনিসুর রহমান, ইসমাইল সরকার, অ্যাড. আলমগীর হোসেন ও মো. রুহুল আমিন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় স্বপ্নের পদ্মাসেতু। এর একদিন পর পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুইজন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় ২৭ জুন এক জরুরি আদেশে পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এরপর থেকে এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন করেছে মোটরসাইকেল চালকেরা। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়। মোটরসাইকেল চালকদের পক্ষে এ রিট করেন বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির সভাপতি কে এম আবু হানিফ হৃদয়। কিন্তু রিটটি তিন দফা শুনানির পর গত ১৫ জানুয়ারি খারিজ করেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। পরে গত ১৯ জানুয়ারি পুনরায় রিটটি আদালতে জমা দেওয়া হয়। এর শুনানি কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসসি/এসআইএ