ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত গ্রেফতার নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে পাটগ্রামের ভারতীয় সীমান্তবর্তি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু পাটগ্রাম পৌরসভার রসুলগঞ্জ নিউপূর্ব পাড়ার আব্দুস সামাদ প্রধানের ছেলে। তিনি নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী পরিচালিত ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের চাকরিচ্যুত সহকারী শিক্ষক।

এর আগে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাতে পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়ায় নিজ বাসার গেটের সামনে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী।

নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং লালমনিরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবেদ আলীর ছোট ভাই। তিনি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক উপ কমান্ডার ছিলেন।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পাটগ্রাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠা অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণের পর এলাকায় ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী। এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে গুরুতর অপরাধে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে চাকরিচ্যুত করেন অধ্যক্ষ এম ওয়াজেদ আলী। যা নিয়ে বেশ বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দেয়। এতে এম ওয়াজেদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষেপে যান নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু।

এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এম ওয়াজেদ আলীর বাসার সামনে গোপনে অবস্থান নেন নাহিদুজ্জামান প্রধান। রাত ১০টার দিকে শহরের কাজ শেষে বাসার সামনে পৌঁছলে নাহিদুজ্জামান প্রধানসহ বাকী অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এম ওয়াজেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তার চিৎকার স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনা অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। শনিবার (২১ জানুয়ারি) পাটগ্রাম টিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে জগতবেড় ইউনিয়নে নিহতের গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যদায় দাফন করা হয়।

ঘটনার একদিন পর শনিবার (২১ জানুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১৪) দায়ের করেন নিহতের ছেলে রিফাত হাসান।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার সকালে আলোচিত এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর ঘনিষ্ট বন্ধু আলমগীর হোসেন আব্দুল্লাহকে এ মামলায় প্রথম গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (২৯ জানুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে পাটগ্রামের ভারতীয় সীমান্তবর্তি এলাকা থেকে এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ মামলায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>>>

চাকরি হারানোর ক্ষোভে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা!

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।