ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাপান-ইউএনএইচসিআর চুক্তি

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাপান-ইউএনএইচসিআর চুক্তি

ঢাকা: জাপান সরকার ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা কার্যক্রম ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে বুধবার ( ২২ ফেব্রুয়ারি) নতুন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী ৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই সহায়তার মাধ্যমে জীবনরক্ষাকারী ও জীবন যাপনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলিকে শক্তিশালী করা এবং কক্সবাজার ও ভাসানচরে শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের স্বনির্ভরতা দেওয়ার পাশাপাশি তৈরি করবে উন্নত ভবিষ্যতের জন্য।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, ইউএনএইচসিআর-এর কিছু প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও সহায়তা কর্মসূচির পাশাপাশি কক্সবাজার ও ভাসানচরের শরণার্থী শিবিরে জীবিকামূলক কার্যক্রমের জন্য জাপান সরকারের এই নতুন অবদান এমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে এসেছে, যখন আমরা ভবিষ্যৎ তহবিল সংকটের মুখোমুখি; যার প্রভাব ইতিমধ্যেই শরণার্থীদের খাদ্য সরবরাহের ওপর পড়েছে। জাপান আবারও বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর কাজে সহায়তায় অগ্রণী ভূমিকায় দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করি এই অনুদান অন্যান্য দাতাদেরও অনুপ্রাণিত করবে এগিয়ে আসতে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, গত মাসে কক্সবাজার সফরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শরণার্থীদের নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। জাপানি একটি কোম্পানির সহযোগিতায় জীবিকামূলক সহায়তার উন্নতি দেখেও আমি আনন্দিত হয়েছি, যেখানে রোহিঙ্গা নারীরা স্যানিটারি পণ্য তৈরি করে। আমরা নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে শরণার্থীদের এই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাবো; এবং শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ইউএনএইচসিআর-সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করবো।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিওগুলোর নিরন্তর কার্যক্রম আমাকে সত্যিই বিমোহিত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি এই কাজে তাদের চলমান সহায়তার প্রয়োজনীয়তা; আর আমরা সেটি চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞ।

এই আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কক্সবাজারে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন স্থাপনাগুলোর কার্যক্রম ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য বিভিন্ন পণ্য নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে গড়ে উঠবে, যেন তারা ক্রমশ হ্রাসমান মানবিক মানবিক সহায়তার ওপর কম নির্ভরশীল হয়।

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাসানচরে জাপানের এই সহায়তা ইউএনএইচসিআর-কে সাহায্য করবে শরণার্থীদের শিক্ষা ও জীবিকামূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে। এই অনুদানের লক্ষ্য হচ্ছে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নে আরও বেশি রোহিঙ্গা শিক্ষক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং চরে একটি পাট উৎপাদন কেন্দ্রে পেশাগত ও অন্যান্য দক্ষতা উন্নয়ন দেওয়া।

এছাড়াও, এই অর্থ ভাসানচরে দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং সরকারের ২০ শয্যা হাসপাতালের পাশাপাশি চিকিৎসা কর্মীদের আবাসনের সংস্কারে সাহায্য করবে। ভাসানচরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নতুন ল্যান্ডফিল সাইট তৈরি এবং বিদ্যমান প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্রকল্প পরিচালনায়ও সহায়তা করবে জাপান সরকারের এই অনুদান।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।