ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আকাশের নিচে দিন পার, রাত কাটে অন্যের বাড়িতে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
আকাশের নিচে দিন পার, রাত কাটে অন্যের বাড়িতে

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঘর পুড়ে যাওয়ার ৮ দিন পার হলেও মেরামত করতে পারেনি কলেজছাত্রী নওশিনের পরিবার। দিন পার হয় খোলা আকাশের নিচে, আর রাত কাটে অন্যের বাড়িতে।

 

তবে তার পুড়ে যাওয়া বই ও পোশাক কিনতে টাকা মিলেছে। বড় বোনের বিয়েতে খরচের টাকা জোগানোর আশ্বাসও দিয়েছেন অনেকে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়ায় রেলওয়ে কোয়ার্টারে থাকেন কলেজছাত্রী নওশিন। তার বাবার নাম কায়সার আলী। রংপুর মডেল কলেজের সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী নওশিন। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজ শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ব্যবস্থাপক হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি করেন তিনি। যার বেতন দিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা ও দুই বোনসহ পাঁচ সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণ মেটান তিনি একাই।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাশের বাসায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এরই মধ্যে পুড়ে যায় নওশিনের পরিবারসহ ওই মহল্লার পাঁচটি পরিবারের ঘড়বাড়ি। আগুনে পুড়ে যায় নওশিনের জমানো সাড়ে ১৫ হাজার টাকাসহ জামা-কাপড় ও বইপত্র সবকিছুই।

ঘটনার আট দিন পর শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পোড়া আধা দেওয়ালের ঘরটিতে সামিয়ানা টাঙানো। আর নিচে পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্র। এরই মধ্যে ঘরের এক কোণে বুক সেলফের সামনে দাঁড়িয়ে নওশিন দেখছেন তার পুড়ে ছাই হওয়া বইগুলো।

ভগ্ন কণ্ঠে নওশিন বলেন, জামা-কাপড় ও আসবাবপত্রের সঙ্গে সব বই পুড়ে গেছে। পত্রিকায় খবর দেখে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১৪ হাজার টাকা পেয়েছি। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমার বড় বোনের বিয়ের খরচ জোগান দিতে আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া নুসরাত অমরিতা নামে এক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ১০ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানিয়েছেন।

নওশিনের বাবা কায়সার আলী বলেন, জেলা পরিষদ থেকে ৮টি ঢেউটিন পেয়েছি। ঘর তৈরি করতে অনেক খরচ। তাই অর্থের জোগানের চেষ্টা করছি। বড় মেয়ের বিয়ের জন্য যা টাকা জোগাড় করেছিলাম, তা পুড়ে গেছে। তবুও ছেলেপক্ষ মানবিকতার পরিচয় দিয়ে আজ বিয়ের তারিখ ঠিক করতে আসছে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, নওশিনের বড় বোনের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে। আগামী রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার পক্ষ থেকে টাকা তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হবে।  

এছাড়াও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি পরিবারকে ঢেউটিন ও নগদ টাকা দেওয়ার কথাও জানান তিনি।  

আরও পড়ুন: আগুনে সব পুড়ে গেল নওশীন ও তিশার, চোখে-মুখে অন্ধকার

আরও পড়ুন: আবেদন করলে বোনের বিয়ের ৫০ হাজার টাকা পাবেন নওশীন

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।