ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে ছেলের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে ছেলের সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলনে মো. লিটন। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: মায়ের হত্যার ঘটনায় জড়িত মূলহোতাদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরিশালের গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের বংকুড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লিটন।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আরা বগেম স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবির কথা বলেন তিনি।



লিখিত বক্তব্যে মো. লিটন বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রিনা বেগমের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের ধরে ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমার মা শুকুরন বেগমকে (৫৫) প্রক্যাশ্যে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনায় প্রতিপক্ষরা ভাড়াটে সন্ত্রাসীদেরও ব্যবহার করেন।

তিনি বলেন, মাকে হত্যার ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বয়াতী বাদী হয়ে পরের দিন গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় গৌরনদী পৌর এলাকার নাসির কাজী, জিয়া হাওলাদার, চন্দ্রাহার গ্রামের রিয়াজ সরদার, ডায়মন্ড, সম্রাট সরদার, মারুফ, সাব্বির সরদার, রাব্বী, বাটাজোর এলাকার নয়ন, সিয়াম, বংকুড়া গ্রামের রিনা বেগম, তার ছেলে মারজান বেপারীসহ ১৫ জনকে নামধারী ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর আমি জানতে পারি ঘটনাস্থলে না থাকলেও শত্রুতামূলকভাবে এজাহারে আমার শ্বশুর বংকুড়া গ্রামের বাসিন্দা তৈয়ব আলী বেপারী ও তার ছেলে জুয়েল বেপারীকেও আসামি করা হয়। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনকে বাদ দেওয়া হয় এবং আমাকে মামলায় সাক্ষীও রাখা হয়নি। এ নিয়ে মামলার বাদী আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বেপারীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।

এদিকে পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত উল্লেখযোগ্য ও হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত ভাড়াটিয়া আসামিদের এ পর্যন্ত গ্রেফতার না করায় নতুন করে শঙ্কায় রয়েছি।
যদিও তারা মামলার ১২ নম্বর আসামি মারুফকে গ্রেফতার করেছে। যে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দিয়েছেন বলে থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। মারুফের দেওয়া তথ্যানুযায়ী এজাহারনামীয় ব্যতীত আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাদী আমার মামাতো ভাই আবু হানিফ বয়াতী টাকার লোভে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে মামলার আসামি রিয়াজ সরদার, জিয়া হাওলাদার, ডায়মন্ডের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। এছাড়া পুলিশ ওই তিন আসামিকে বাদ দেওয়ার জন্য চার্জশিট প্রস্তুত করেছে বলেও শুনেছি। ফলে আমি এরইমধ্যে মামলার বাদী পরিবর্তনের জন্য আদালতে আবেদন করেছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিটন অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমার মায়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রকৃত জড়িত সব আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদীকে একাধিকবার কল করালে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। আর মামলাটি তদন্তাধীন।

এ বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি।

তিনি বলেছেন, এ মামলাটির চার্জশিট এখনও আদালতে দাখিল করা হয়নি।

অপরদিকে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, চার্জশিট দেওয়া হয়নি, সেখানে এজাহারভুক্ত কোনো আসামি বাদ গেছে বা কে সংযুক্ত হয়েছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করাটাই ঠিক হবে না। তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাদের নাম বেরিয়ে আসবে তাদের বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

আর মামলা দায়েরের সময় নিহতের ছেলে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেননি জানিয়ে ওসি বলেন, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি শ্বশুরবাড়ির লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে চলে আসায় ঘটনার সময় লিটন (নিহতের ছেলে) তখন মামলা দিতে চাননি। তাই নিয়মানুযায়ী তথ্যদাতাই মামলার বাদী হয়েছেন। তবে তিনি চাইলে মামলার বাদী পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।