ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

যুবলীগকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আ.লীগের ৪ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
যুবলীগকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আ.লীগের ৪ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে নিজঘর থেকে মোখসুদ আলম বিপ্লব (৩৬) নামে এক যুবলীগকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চার আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার ধারায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী।  

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দিনগত রাতে আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ রফিক, চরচান্দিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাড়াইতকান্দি হোছাইনিয়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী মর্তুজা ও চরচান্দিয়ার যুবলীগকর্মী মোহাম্মদ করিম।  

এর আগে একই ঘটনায় গত ৮ মার্চ বুধবার নিহতের মামা আবুল হাশেম বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছিলেন।

পুলিশ ও নিহতের স্ত্রীর এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের পশ্চিম সুজাপুর গ্রামের চুনি মাঝি বাড়ির নূরুল হক খোকা মিয়ার ছেলে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মোখসুদ আলম বিপ্লবের বসত ঘরের শয়ন কক্ষের (বুতের) আঁড়ার সঙ্গে ফাঁস লাগানো অবস্থায় গত ৮ মার্চ বুধবার দুপুর ২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

পরদিন বৃহস্পতিবার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন আসামিদের সঙ্গে তার স্বামী বিপ্লবের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। পুর্ব বিরোধের জেরে আসামিরা তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তার স্বামী তার ব্যবহৃত ফেইসবুক লাইভে এসে এর প্রতিকারও চেয়েছিলেন। তার কাছেও সবসময় দোয়া চাইতেন। গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি তিন সন্তান নিয়ে তার পিতার বাড়িতে ছিলেন। বুধবার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সোনাগাজী থানায় গেলে থানায় স্বামীর মরদেহ দেখতে পান। ঘটনার দিন তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম ঢাকার একটি হাসপাতালে ছিলেন।  

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, বিপ্লবের মামা আবুল হাসেম বাদী হয়ে গত বুধবার সোনাগাজী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ দাফনের পর তার স্ত্রী বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দাযের করেছেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে তার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য।  

পুলিশ আরও জানায়, মোখসুদ আলম বিপ্লবের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় চারটি ডাকাতি ও চারটি মাদক আইনের মামলাসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো মাথায় নিয়ে তিনি একাধিকবার জেলও খেটেছেন।  

২০২২ সালের আগস্ট মাসে চরচান্দিয়া ইউনিয়নে ইয়াবা উদ্ধারের একটি ঘটনায় অন্য একজনের সঙ্গে মোখসুদ আলম বিপ্লবকে আসামি করে মামলা রুজু এবং ঘটনায় জড়িত যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দিনের নাম বাদ পড়ায় বিপ্লব আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ রফিক ও থানা পুলিশকে দায়ী করেন। তৎকালীন সময়ে নিজের ফেইসবুকে লাইভে এসে মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে প্রতিকার চাইতেন।  

এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ রফিকের নাম বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতেন। সর্বশেষ মৃত্যুর পূর্বের দিনও ওই নেতার নাম উল্লেখ করে মিথ্যা মামলায় পূণঃজামিন নিয়েছেন মর্মে তার ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার মৃত্যুর পর প্রায় সাত মাস আগে ফেইবুক লাইভে চার নেতার বিরুদ্ধে দেওয়া তার বক্তব্যটি ভাইরাল হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসএইচডি/এসএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।