ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২৩
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা: বর্তমান সরকারের তৈরি করা কালো আইন বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠন।  

শনিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর বিচার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দর দাবিতে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা।

 

গণঅধিকার পরিষদ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।  

বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠ রোধ করতে চাচ্ছে বর্তমান সরকার। আর তাই দেশের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই সরকার কালো আইন ব্যবহার করেছে। এতে বারবারই সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, মাছ মাংস চালের স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে আজ প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেফতার হয়েছে। সম্পাদককের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সরকার। মাছ মাংস চালের স্বাধীনতার কথা দেশের সর্বস্তরের জনগনের কথা। আমরা অবিলম্বে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

গণধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ বলেন, রোজার মধ্যেও আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে, কারণ ফ্যাসিবাদী সরকার যত দিন আছে ততদিন ঘরে থাকার সুযোগ নেই। গত কয়েকদিন আগে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক বা গ্রেপ্তার নতুন কিছু নয়। গত চার বছরে প্রায় ১১০০ মামলা হয়েছে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। গত এক মাসের সাত জন সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠ রোধ করতে চাচ্ছে বর্তমান সরকার। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হচ্ছে গণমাধ্যম কিন্তু সেই গণমাধ্যম আজও স্বাধীন নয়। দেশের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই সরকার যে কালো আইন করেছে তার মাধ্যমে বারবার সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হচ্ছে। এই কাল আইন থেকে কেউই রেহায় পাচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। দেশে আজ যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এটা নির্বাচনী বছর। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে এই সরকার ২০১৮ সালে মাদক-বিড়ি ও বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ওই মাদকবিরোধী অভিযানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল সেইসঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন প্রায় ৪৫০ লোক। সেই ভাবেই আগামী ২৪ সালে যে নির্বাচন হওয়া হবে সেই নির্বাচনেও ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, প্রথম আলোর সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শুধু প্রথম আলো নয়, গত দুই দিন আগে চট্টগ্রামের এক যুবলীগ নেতা দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক মাহবুবুল আলম লাভলু ভাইয়ের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে। এই মামলা ক্রমাগতভাবে আরও বাড়তে থাকবে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে মামলার সংখ্যাও বাড়তে থাকবে। এখন তো সাংবাদিকদের আঘাত করা হচ্ছে। সামনে যখন শিক্ষক, রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী যারা কথা বলবে তাদেরকেও এই মামলা দিয়েই আঘাত করা হবে।

তিনি বলেন, জনগণের মুখের কথা দমন করে আগামী নির্বাচনে এই সরকার বসতে চাই। এ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয় সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন কে দিয়ে আগামী নির্বাচন কেমন হবে সে নিজের সরকার দেখিয়ে দিয়েছে। আরও নেক্কারজনক কাজ করেছে গতকাল দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক একটি নেক্কারজনক মত প্রকাশ করেছে এতেই বোঝা যায় যে জাতির বিবেক পচে গেছে।

মানববন্ধন এসময় উপস্থিত ছিলেন- গণআধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম ফাহিম, যুগ্ম আহবায়ক (দক্ষিণ) নাজিম উদ্দীন, যুগ্ম সদস্য সচিব মো. তাদের রহমান, রাশেদ খান, মঞ্জুর মোর্শেদ, সোহরাব হোসেন প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২৩
এসজেএ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।