ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রকৌশলীসহ দুই সরকারি কর্মচারীকে পেটালেন চেয়ারম্যান!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
প্রকৌশলীসহ দুই সরকারি কর্মচারীকে পেটালেন চেয়ারম্যান! অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জুয়েল

খুলনা: খুলনার কয়রা উপজেলা আমাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জুয়েল ও তার বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত ও মারপিটের শিকার হয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন, সার্ভেয়ার মোঃ আক্তারুজ্জামান ও অফিস সহকারী মো. রিয়াদ হোসেন।

এ ঘটনায় বুধবার (৫ এপ্রিল) খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

মারপিটের শিকার আক্তারুজ্জামান বলেন, আমাদী ইউনিয়নের সোনাখালী খালের বাৎসরিক ইজারা বন্দোবস্তের জন্য গত সোমবার (৩ এপ্রিল) আমরা খালটির সীমানা নির্ধারণের জন্য যাই। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ও অবগত ছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর ইউপি সদস্য মো. মঈনুল ইসলাম লিটন তাদের সুবিধা মতো স্থান থেকে খালের সীমানা নির্ধারণের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ সময় চেয়ারম্যান জুয়েলসহ আরও ৫০-৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। তারাও ইউপি সদস্য লিটনের পছন্দ অনুযায়ী স্থান থেকে সীমানা নির্ধারণের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ বিষয় নিয়ে আমরা সরকারি কাজে আমাদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি উল্লেখ করলে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।  

একপর্যায়ে চেয়ারম্যান জুয়েল, ইউপি সদস্য লিটন, স্থানীয় শাহিনুর ইসলাম, আল মামুন, জাহাঙ্গীর মোড়ল, মহাসিন সানা, নাঈমুর রহমান, লুৎফর মোড়ল, নুর ইসলাম গাজী, আব্দুল্লাহ, মগবার আলী মোড়ল, আজগর, ছলেমান, রাজুসহ কয়েকজন আমার ওপর হামলা করে। এছাড়াও অফিস সহকারী রিয়াদকে বেধড়ক মারপিট করে এবং সরকারি কাজ বাস্তবায়নে বাধা দেয়।  

অপরদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন আমাদের ঠেকাতে আসলে তাদের ওপর চড়াও হলে স্থানীয় কয়েকজন লোক তাদের সরিয়ে নিয়ে যায়। তাদের মারতে না পেরে চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী গালিগালাজ শুরু করে। এ সময় আমার ফোন দিয়ে একজন পুরো ঘটনা ভিডিও করছিলো। চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের সবার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অফিস সহকারী মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, মারপিটর করার পর আমাদের অবরুদ্ধ করে তাদের পাটনিখালী পূর্ব পাড়া মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষে প্রতিবেদন দিতে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে আমরা সেখান থেকে সরে আসি।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মমিনুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, চেয়ারম্যান ও সার্ভেয়ারকে নিয়ে গত মঙ্গলবার আমার কার্যালয়ে বসেছিলাম। যে ঘটনা ঘটেছে খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে সার্ভেয়ার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জুয়েল বলেন, সেখানে কাউকে মারপিট করা হয়নি। খালের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে সেটি মীমাংসাও হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন বলেন, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি জানতে পেরেছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এর বাইরে সংক্ষুবদ্ধ ব্যক্তি ইচ্ছে করলে মামলা করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।